জাতীয় জাদুঘরে দেশের সর্বপ্রথম ‘ভার্চুয়াল গ্যালারি’
প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:২৩
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনস্ত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর-এর যৌথ আয়োজনে ঢাকার শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জাতীয় জাদুঘরের ভার্চুয়াল গ্যালারি উদ্বোধন করা হয়।
২৫ এপ্রিল ২০১৭ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই- ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে আইসিটি ভিত্তিক এই ভার্চুয়াল গ্যালারির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি; জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মোঃ নজরুল ইসলাম খান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি শিল্পী হাশেম খান অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম, তার বক্তব্যে মন্তব্য করেন যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এই ভার্চুয়াল গ্যালারি একটি অনন্য ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও তিনি জাদুঘরের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি, তার বক্তব্যে আশা ব্যক্ত করেন, বর্তমান সরকার এই ভার্চুয়াল গ্যালারি সম্প্রসারণে ও বাংলাদেশের অন্যান্য জাদুঘরের জন্যে ভার্চুয়াল গ্যালারি তৈরিতে অর্থ বরাদ্দ করবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অফিস চলাকালীন স্থায়ী গ্যালারির প্রদর্শনীতে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে এই জাদুঘরে রাখা নিদর্শনসমূহ জাদুঘরে আগত দর্শকদের নিকট উন্মুক্ত বিধায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জনসাধারণ ও আন্তর্জাতিক মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের তথ্য পৌঁছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট জাদুঘরের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের তথ্য ভাণ্ডার সহজলভ্য হচ্ছে না। গ্যালারিতে প্রদর্শিত সকল নিদর্শন ও স্টোরে সংরক্ষিত নিদর্শন থেকে উল্লেখযোগ্য নিদর্শনের মানসম্পন্ন আলোকচিত্র দিয়ে “ভার্চুয়াল গ্যালারি” নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর দোরগোড়ায় অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে পৌঁছে দেওয়া এখন সম্ভব হচ্ছে। সকল গ্যালারি অ্যানিমেশন আকারে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে করে তরুণ প্রজন্ম সহজেই এটি নেভিগেট করতে আগ্রহী হয়। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কোনো ব্যক্তি অনলাইনে বাংলাদেশ জাদুঘরের ওয়েবসাইট (http://bangladeshmuseum.gov.bd/vt/ ) ভিজিট করে জাতীয় জাদুঘরের ৩৬টি গ্যালারির ৩,০০০ এর অধিক নিদর্শনের মানসম্মত আলোকচিত্র সপ্তাহের ৭ দিন এবং ২৪ ঘণ্টা প্রদর্শন করতে পারবে। ভার্চুয়াল গ্যালারিতে প্রত্যেকটি নিদর্শনের সাথে বিস্তারিত বর্ণনা থাকার ফলে এই গ্যালারির ব্যবহারকারীরা সহজেই এ সকল বস্তু প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক তাৎপর্যের ব্যপারে অবগত হবেন। কোন ব্যক্তি নিজের কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে, তিনি নিকটস্থ ডিজিটাল সেন্টারে গিয়েও এই সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড-এর কারিগরি সহায়তায় একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড এর মাধ্যমে নাগরিক সেবা সহজিকরনে আসা অসংখ্য উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা থেকে বাছাই হয়ে সেবা প্রদানে সবচেয়ে বেশি উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাসমূহ স্বল্প আকারে স্বল্প সময়ে পাইলট প্রকল্প আকারে বাস্তবায়নের জন্যে সীমিত অনুদান পাচ্ছে। পাইলট শেষে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে উদ্ভাবনী সেবাটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীসহ অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং এটুআই প্রোগ্রামের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন।