আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও
প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৭, ১৩:৩২
সেতার-সরোদের মধুর ছন্দে বাংলা ১৪২৪ সালকে বরণ করে নেওয়ার পর সূর্যোদয়ের মুহূর্তে রমনার বটমূলে ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও... আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও...’ সমবেত কণ্ঠে এই গান গেয়ে পয়লা বৈশাখকে বরণ করে নিয়েছেন ছায়ানটের শিল্পীরা। ৫০ বছর আগে ঠিক একই গান দিয়েই শুরু হয়েছিল ছায়ানটের বর্ষবরণের রেওয়াজ, যা আজ পয়লা বৈশাখের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ।
১৪ এপ্রিল (শুক্রবার) রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি সঙ্গীতানুষ্ঠানে বেশ কিছু নতুনত্ব আনা হয়। মঞ্চ সজ্জায় পরিবর্তন এসেছে। ভোরের স্নিগ্ধতার প্রকাশ আছে সাজসজ্জায়। এ বছর ছায়ানটের এই আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ‘আনন্দ, আত্মপরিচয়ের সন্ধান ও মানবতা।
সত্তরের দশকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন শুরু করে ছায়ানট। সেদিনের আয়োজনের প্রথম গানটি ছিল ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও...’। ওই স্মৃতিকে স্মরণ করতেই এবার প্রভাতী আয়োজনের এ গানে কণ্ঠ মিলিয়েছে ছায়ানটের ১১৫ জন শিল্পী।
অনুষ্ঠান শেষ হয় ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ দিয়ে। বরাবরের রীতি অনুসারে এরপরে ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন কথা বলেন।
আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বের জন্য দ্রুত বদলে ফেলা হয় মঞ্চসজ্জা। সকাল সাড়ে আটটার পর শুরু হয় পালাগান। দিলু বয়াতি ও তাঁর দলের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দিওয়ানা-মদিনা পালা। ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত শিল্পীদের নিয়ে পালাগানের পরিবেশনা এবারেই প্রথম।
এদিকে ছায়ানটের বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে রমনার চারদিক থেকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভেতরে কাউকে কোনো প্রকার ব্যাগ হাতে ঢুকতে দেয়নি তারা। তবে এই কড়া নিরাপত্তার ভেতরে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে সকলের অংশগ্রহণ।
এই মুহূর্তে বটমূলের চারপাশ কানায় কানায় ভরে উঠেছে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সী পেশার মানুষের আগমনে মুখরিত পুরো রমনা পার্কের ভেতরের পরিবেশ।