কবিতা: এ দেশ তবে কন্যাহীন হোক

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৩:৪৮

একজোড়া লাশ, 
একটি রেললাইনের সমান্তরালে মিশে গেছে ঘাসের সবুজের রঙে;
টিয়ে পাখি হতে চেয়েছিলো বুঝি মেয়েটি? 
জানি না; শুধু জানি হযরত আলী নামের এক পিতাকে
যে জেনে গিয়েছিলো বাঁচাতে পারবে না, 
তাই নিশ্চিন্তে, চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়েছে রেললাইনের নিচে গিয়ে
সাথে নিয়ে গেছে আদরের ধন আট বছরের মেয়েটিকেও।

ব্যস! জীবনের গল্প শেষ!!   
একজোড়া লাশ আর দুই জোড়া পা 
রেললাইনের সবুজে নিজেদের ছড়িয়ে দিয়ে চারটি পা তাক করে আছে  
এই নিয়ত উত্থিত পচে যাওয়া সমাজের দিকে, 
এই বেচাকেনার বেসাতি করা প্রশাসনের দিকে, ধর্ষণোম্মুখ রাষ্ট্রের দিকে। 

রূপাকে কেনো ডাকো আবার? 
মাথার উপরে ঘাড়টা শক্ত করে বসাতে চেয়েছিলো বলে
জীবনের দাম চুকোতে হয়েছিলো আগুনের মেয়ের 
চলতে চলতে জীবনের পথে পথে...
তনু, রিশা, ফাহিমা, মহিমা আর খবরে আসা মাসে তিনশো পঁচিশ
কিংবা খবর না হওয়া লক্ষ কন্যার যোনীদায়গ্রস্থ জীবনের লাশ
এমন লাশ আজকাল বড়ো সস্তায় মেলে এই জনপদে
একটি ইলিশের চেয়ে কম দামে মেটে এখানে জোড়া জীবনের খেরোখাতা
ধর্ষণের দেশে এমন মৃত্যু এখন প্রতিদিনের যাপিত জীবনে মিশে গ্যাছে; 
অকাল বার্ধক্যের এই শহর, এই নগর তাই আর কাঁপে না দ্রোহে মিছিলে। 

এ দেশ তবে প্রতিরাতে কাঁপুক পিতা-কন্যার জোড়ালাশের অভিশাপে
এ দেশ কেবল বার্ধক্য আর জরায় বাঁচুক
মরে যাক সব পিতারা, মরে যাক সব বিবেক বোধেরা 
এ দেশ তবে কন্যাহীন হোক, 
এ দেশ প্রেমহীন হোক, 
এ মৃত্যুপুরীতে কেবল নষ্ট পৌরুষের নগ্ননৃত্য হোক, 
এ দেশে ধর্ষণের জলসা রাত জমুক; 
এ দেশ তবে পুরুষ শ্বাপদের খাদ্য হোক।