কুকুরদের রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে রাজি হননি সুনীতা

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:১৫

অনলাইন ডেস্ক

১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত কেরালা রাজ্যে ২৫টি কুকুরসহ সুনীতা নামে এক নারীকে খুঁজে পান উদ্ধারকর্মীরা। খবর এনডিটিভির

১৮ আগস্ট (শনিবার) হিউমেইন সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের স্যালি ভার্মা নামে এক উদ্ধারকর্মী এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কেরালার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ত্রিসুরে বন্যাকবলিত একটি বাড়িতে সুনীতা, তার স্বামী ও ২৫ টি কুকুরের সন্ধান পান উদ্ধারকর্মীরা। বাড়িটি প্রায় সম্পূর্ণরুপে পানিতে ডুবে ছিল। উঁচু করে রাখা কয়েকটি খাটের উপর জীর্ণ কুকুরগুলো কোনরকমে জড়োসরো হয়ে বসেছিল। ২৫ টি কুকুরের কোনটাই সুনীতার পালিত নয়। কুকুরগুলো সব রাস্তার নেড়ি কুকুর ও পরিত্যাক্ত পোষা কুকুর।

উদ্ধারকর্মীরা কুকুরগুলোকে রেখে সুনীতা ও তার স্বামীকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তিনি তাতে রাজি হননি এবং স্বেচ্ছাসেবী ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেন। পরে তাদের জন্য আলাদা আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে আবার উদ্ধারকর্মীরা সেখানে যায় এবং কুকুরসহ সুনীতাকে উদ্ধার করে।

এ প্রসঙ্গে ভার্মা বলেন, সুনিতা, তার স্বামী ও কুকুরগুলোকে একটি বিশেষ আশ্রয় কেন্দ্র রাখা হয়েছে। কারণ দুর্যোগের কারণে যেসব ত্রাণশিবির স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো প্রাণীদের রাখতে রাজি হয়নি।

ভার্মা আরও জানান, সুনিতা ও তার কুকুরগুলোর জন্য একটি তহবিল গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন তিনি, যেন বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সুনিতার বাড়িতে কুকুরগুলোর জন্য ঘর তৈরি করা যায়।

উল্লেখ্য, ভারতের কেরালা রাজ্যে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২৪ জনে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। চলতি বর্ষায় অতিরিক্ত বর্ষণে রাজ্যটির প্রায় ১০০ বাঁধ, জলাধার ও নদীর পানি উপচে মারাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছে।

গত ৮ আগস্ট থেকে ভয়াবহ বর্ষণ চলছে কেরালায়। এর ফলে শুরু হয়েছে বন্যা ও ভূমিধস। এই দু:সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে বিমান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ পরিবহনও বন্ধ হয়ে পড়েছে। গত ৯ দিনে বন্যা, বৃষ্টি ও ভূমিধসে প্রাণ হারান এসব মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্তত ২ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ১৫০০ এরও বেশি শরণার্থী শিবিরে।