‘কীভাবে একটি সভ্য দেশ অভিযুক্ত খুনিকে আশ্রয় দিতে পারে’
প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২১:১৩ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২১:১৮
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি হিসেবে অভিযুক্তদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে জনমত তৈরির জন্য কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কানাডার মন্ট্রিয়েলে সেন্টার মন্ট রয়েলে স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কানাডা শাখা এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। খবর বাসস।
কীভাবে একটি সভ্য দেশ অভিযুক্ত খুনিকে আশ্রয় দিতে পারে— এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে এই দাবি রেখে যাচ্ছি, যে দেশে আপনারা বসবাস করছেন, সেই দেশের জনপ্রতিনিধিদের চিঠি লিখুন এবং এই চেতনাজাগ্রত করুন কেন এসব দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমামনের হত্যাকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যতদূর আমরা জানি বঙ্গবন্ধুর এক খুনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছে। একজন কানাডায়, দুইজন পাকিস্তানে এবং অপর দুইজন কোথায় আছে সন্ধান পাওয়া যায়নি, আমরা তাদের আটকের জন্য খুঁজছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে কেন তারা খুনিদের লালন করছে এবং আশ্রয় দিচ্ছে। তারা বলেছে কানাডার সংবিধানে উল্লেখ আছে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থাকলে তাকে তার দেশে ফেরত পাঠাবে না। কিন্তু এটি কি ধরনের কথা!’
শেখ হাসিনা বলেন, পিতা হারানোয় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। এসময় তিনি প্রশ্ন রাখেন ‘আইনে যাদের শাস্তি হওয়ার কথা তাদের কেন রক্ষার চেষ্টা হচ্ছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘এর অর্থ হলো, যে দেশে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান নেই, সেই দেশ হত্যাকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এ জন্য জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সামনে আমি এই প্রশ্ন রেখে গেলাম।’
তিনি বলেন, তার সরকার ১৯৯৬ সাল থেকে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বাধার সম্মুখীন হয়েছে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকালে যারা ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে সেই ঘৃণ্য খুনিদের বিচার বন্ধের জন্য অনেক বড় জায়গা থেকে তিনি টেলিফোন পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বলেছি যে, আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন এবং এখানে আমাদের দেশের আইন রয়েছে এবং আইন অনুযায়ী রায় কার্যকর হবে।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ কানাডা শাখার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ মাহমুদ মিয়া। সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্স অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক এবং আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।