নারীর অমর্যাদার অভিপ্রায়ে মন্তব্য ও অঙ্গভঙ্গির শাস্তি

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:৫১ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৩৬

অনলাইন ডেস্ক

ধারা
কোন নারীর শালীনতার অমর্যাদার অভিপ্রায়ে কোন মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা কোন কাজঃ যে ব্যক্তি কোন নারীর শালীনতার অমর্যাদা করিবার অভিপ্রায়ে এই উদ্দেশ্যে কোন মন্তব্য করে, কোন শব্দ বা অঙ্গভঙ্গি করে বা কোন বস্তু প্রদর্শন করে যে উক্ত নারী অনুরূপ মন্তব্য বা শব্দ শুনিতে পায় অথবা অনুরূপ অঙ্গভঙ্গি বা বস্তু দেখিতে পায়, কিংবা উক্ত নারীর নির্জনবাসে অনধিকার প্রবেশ করে, সেই ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদন্ডে--যাহার মেয়াদ এক বৎসর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।

ভাষ্য
বিশ্লেষণঃ কোন নারীর শালীনতার অমর্যাদার উদ্দেশ্যে কোন মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা কোন কাজ করিবার শাস্তি এই ধারায় বর্ণিত হইয়াছে। শাস্তির পরিমান অনুর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড।

বাংলাদেশে এই ধারার অপরাধ বাড়িয়াই চলিয়াছে। স্কুল কলেজগামী মেয়েদের রাস্তাঘাটে দেখিয়া শীষ দেওয়া, গান গাহিয়া ওঠা, চোখ বাকা করিয়া তাকানো অহরহ ঘটিতেছে।

নারীর শালীনতা এমন একটি বস্তু যাহা সংরক্ষণের দায়িত্ব নারী-পুরুষ সকলের, অর্থাৎ সমাজের তথা রাষ্ট্রের। ইহা একমাত্র নারীরই সম্পদ, পুরুষের ভৈবব অন্যত্র।

প্রমাণ
এই ধারার অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত করিতে হইলে নিম্নবর্ণিত তথ্যাবলি প্রমাণ করিতে হয়
(১) অভিযুক্ত ব্যক্তি
(ক) কোন মন্তব্য করিয়াছিলেন, বা
(খ) কোন শব্দ করিয়াছিলেন, বা
(গ) কোন অঙ্গভঙ্গি করিয়াছিলেন, বা
(ঘ) কোন বস্তু প্রদর্শন করিয়াছিলেন, বা
(ঙ) কোন নারীর নিভৃতবাসে অনধিকার প্রবেশ করিয়াছিলেন।
(২) অভিযুক্ত ব্যক্তি উপরোক্ত ক থেকে ঘ-এর ক্ষেত্রে উক্ত সকল কোনো নারীকে শুনাইতে বা দেখাইতে অভিপ্রায় করিয়াছিলেন।
(৩) উহার দ্বারা তিনি কোন নারীর শালীনতার মর্যাদা করিতে অভিপ্রায় অভিপ্রায় করিয়াছিলেন।

কার্যক্রম
আমলযোগ্য নহে: ওয়ারেন্ট: জামিনযোগ্য: বিচারকের অনুমতি সাপেক্ষে আপোষযোগ্য: যেকোন ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে বিচারযোগ্য।

চার্জ
আমি (বিচারক ও ক্ষমতাসহ আদালতের নাম ইত্যাদি) আসামির/আসামিদের নাম.............আপনার/ আপনাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন করিতেছি যে, আপনি/আপনারা.............তারিখে..........টার সময় অমুক স্থানে অমুক নারীর শালীনতা অমর্যাদা করিবার অভিপ্রায়ে অমুক শব্দ বা এইরূপ অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করিয়াছেন, যাহা দন্ডবিধির ৫০৯ ধারামতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং আমার আদালতে বিচারযোগ্য।

[অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ গাজী শামছুর রহমান রচিত ‘দণ্ডবিধির ভাষ্য’ বই থেকে হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে। বইটি সাধু ভাষায় রচিত]