অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ, পালাল স্বামী-শাশুড়ি

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০১৬, ১৫:২৭

অনলাইন ডেস্ক

গাজীপুরে এনি আক্তার (৩৩) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেছে স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুর। অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে গৃহবধূ এনির রক্তে লাল হয়ে ওঠে ঘরের বারান্দা ও বাড়ির উঠান। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে মৃত ভেবে বাড়িঘরে তালা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা। পালানোর আগে পানি ঢেলে রক্ত মুছে দেওয়ার চেষ্টাও করেন তারা।  

প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে এনির বাবা-মা উঠানে রশিতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এনিকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এনির বাবা মজিবর রহমান ও স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে এনির সঙ্গে বিয়ে হয় কাথোরার হাবিব উল্লাহ মাস্টারের ছেলে খায়রুল ইসলামের। 

এনির পরিবার অস্বচ্ছল থাকায় এ বিয়েতে খায়রুলের পরিবারের সম্মতি ছিল না। বিয়ের পর থেকেই এনিকে তালাক দেওয়ার জন্য খায়রুলকে চাপ দিচ্ছিলেন তার মা রেহেনা বেগম ও বড় ভাই মঞ্জু। পরিবারের চাপে খায়রুল এনিকে তালাক দিলেও ক’দিন পরে আবার ৭ লাখ টাকার দেনমোহরে তাকে পুণরায় বিয়ে করেন। 

এ ঘটনায় খায়রুলকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করা হয়। দেড় বছর আগে তাদের একটি মেয়ে হয়। এতে এনির ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এনিকে নিয়ে পৃথক সংসার করার কথা বলে খায়রুল গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। পরে ওই বাসায় এনিকে রেখে খায়রুল গা ঢাকা দেয়। 

এনি ও তার স্বজনরা খায়রুলকে গুম করেছে বলে থানায় অভিযোগ দেয় খায়রুলের পরিবার। এনির পরিবার পুলিশের সহযোগিতায় খায়রুলকে সাভার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আটক করে। ওই বাড়িতে খায়রুলের মা রেহেনা বেগমও অবস্থান করছিল। পরে স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে খায়রুলকে জেল থেকে জামিনে বের করা হয়।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সালিশে দেনমোহর ও খোরপোষ বাবদ ৮ লাখ ৫ হাজার টাকায় তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়। খায়রুলের পরিবার নগদ টাকার পরিবর্তে দুই কাঠা জমি এনিকে রেজিস্ট্রি করে দিতে সম্মত হয়।
  
সোমবার (২৯ আগস্ট) জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলে এনি আক্তারকে খায়রুলদের বাড়িতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন চালানো হয়। 

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে মামলা নেওয়া হবে।