‘বর্ষা মৌসুমে প্রকল্পের পেপার ওয়ার্ক সম্পন্ন করুন’
প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০১৭, ১৫:১৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থবছরের শেষদিকে তাড়াহুড়ো না করে অর্থবছরের শুরু থেকেই উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণের জন্য সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের তৃতীয় বর্ষে ২ জুলাই (রবিবার) বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের হার আরও বাড়াতে হবে। অর্থবছরের শেষদিকে তাড়াহুড়ো না করে বছরের শুরু থেকেই বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করুন।’
একইসঙ্গে তিনি ‘ফাস্ট ট্রাক’ ভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্যও তাদের আরো আন্তরিক হবার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে প্রকল্পের পেপার ওয়ার্ক সম্পন্ন করুন। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের প্রয়োজন হলে তা দ্রুত করে ফেলুন। পাশাপাশি কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোন আপোষ করা যাবে না। ‘ফাস্ট ট্রাক’ ভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নির্ধাতি সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য আরও আন্তরিক হোন।’
প্রধানমন্ত্রী ২ জুলাই (রবিবার) সকালে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় একথা বলেন।
বর্তমান মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে এটি ছিল সরকারের সর্বোচ্চ আমলাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বৈঠক।
সচিবদের সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি রাজনৈতিক সরকার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্ষমতায় আসে। কিন্তু, সচিবদের আরো অনেক দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দেয়ার সুযোগ থাকে।
তিনি বলেন, ‘কাজেই এটা সচিবদের উপরই নির্ভর করে দেশ কিভাবে চলবে।’
শেখ হাসিনা সচিবদের কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, তার দলের রাজনৈতিক দর্শন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি একটি ভালো দলের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
উন্নয়ন কর্মসূচি এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ উপকৃত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গ্রাম উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে, কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। ‘যাতে গ্রামের মানুষ কাজের খোঁজে শহরে না আসে। শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে,’যোগ করেন তিনি।
বৈঠকের শুরুতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকারের সংস্কার কর্মসূচির উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন।
এ সময় অন্যানের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষ এবং যোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব প্রদানের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘ভালো কাজের পুরস্কার আর মন্দ কাজের জন্য তিরস্কার ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিন। সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে সেবা পেতে জনগণকে যাতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয় তার উদ্যোগ নিন।’
তিনি বেতন-ভাতা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দুর্নীতি বন্ধের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘বেতনভাতা বাড়ানো হয়েছে, কর্মচারিদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।’
একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করে সকলের ন্যায়-সঙ্গত পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করারও আহবান জানান।
তার সরকার দায়িত্বভার গ্রহণের পর এডিপি’র আকার এবং বাস্তবায়নের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৫-০৬ সালে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ছিল ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এবার বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। ৮ বছরে বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৬ দশমিক ২৫ গুণের বেশি।