সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করবে ঢাকা ও স্টকহোম
প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৭, ২০:৪৮ | আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭, ২০:৫০
ঢাকা ও স্টকহোম অর্থনৈতিক সহযোগিতার খাতসমূহে সম্পর্কোন্নয়ন এবং দ্বিপক্ষীয় সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আরো উৎসাহিত করার ব্যাপারে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
দুই দেশের নেতৃবৃন্দ অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সদিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার এখানে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে একথা বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের আমন্ত্রণে তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে গতকাল ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) সুইডেন পৌঁছেন।
বাংলাদেশ ও সুইডেনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধান স্টকহোম সফর করছেন।
১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশকে সুইডেন স্বীকৃতি প্রদান করে। তখন থেকেই পল্লী কর্মসংস্থান, পল্লী অবকাঠামো, মানবাধিকার, প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং লিঙ্গ সমতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতের উন্নয়নে সুইডেন বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়্যাল ক্যাসল-এ সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্লের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী সুইডেনের পার্লামেন্ট পরিদর্শন করেন এবং ভারপ্রাপ্ত স্পিকার তোবিয়াস বিলসট্রোমের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
সুইডেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাবেল্লা লাভিন এবং বিচার ও অভিবাসন মন্ত্রী মরগান জোহানসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দুই প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের সম্পর্ক উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। তারা গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুইডেন সফরকালে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
উভয় প্রধানমন্ত্রী উৎপাদনশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে বৈশ্বিক চুক্তির অবকাঠামোর আওতায় সহযোগিতা করতে অঙ্গীকার করেন।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রেডিমেট গার্মেন্ট ট্রিপাটি কনসালটেটিভ কাউন্সিল’র প্রতি সমর্থন ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রশিক্ষণ ও বৃত্তি প্রদানে সুইডেন সরকারের চলমান কর্মসূচির প্রতি স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা। উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার আরো ক্ষেত্র উন্মোচনে বাংলাদেশ ও সুইডেন সরকার শিক্ষা ও গবেষণায় উৎসাহ প্রদানে একমত হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রী এসডিজিসহ ‘২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ বাস্তবায়নে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সুইডেন ও বাংলাদেশ মানবাধিকার আইন এবং নিরাপত্তা পরিষদসহ একটি শক্তিশালী জাতিসংঘ ব্যবস্থা, বহুমুখী সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ঘোষণা করছে। তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কর্মকান্ড এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেন।
উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা করেন। তারা সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়েরও অঙ্গীকার করেন।
তারা সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিবাসন এবং উন্নয়ন খাতে উদীয়মান ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানান।