ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন
প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৭, ০২:০২
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারেখা গ্রামে রোকসানা আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও হত্যার পর মরদেহ গুম করার মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ আলাদা ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
১৪ জুন (বুধবার) দুপুরে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উজিরপুরের কাউয়ারেখা এলাকার রফিকউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে স্বপন হাওলাদার, সুখময় হালদারের ছেলে সমীর হালদার ও কানাই বৈরাগীর ছেলে গৌরাঙ্গ বৈরাগী। তবে রায় ঘোষণার সময় স্বপন হাওলাদার শুধু উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার ৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এরা হলেন- স্বপনের বাবা রফিকউদ্দিন হাওলাদার, রফিকের ভাই মোকসেদ হাওলাদার এবং স্থানীয় বাসিন্দা সফিজউদ্দিন।
আদালত সূত্র জানায়, নিহত রোকসানা আক্তার গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকায় কাদের ফকিরের মেয়ে। নানি অসুস্থ থাকায় ঘটনার কয়েকদিন আগে সে উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামে নানি বাড়িতে যায়। অভাবের কারণে রোকসানা তার নানি বাড়ির পাশে রফিক উদ্দিনের বাড়িতে কাজে নেয়। সেখানে রফিক উদ্দিনের ছেলে স্বপন হাওলাদার কৌশলে তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়লে রোকসানা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
ঘটনার দিন ২০০০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পর নানি বাড়িতে অন্যদের সঙ্গে ভিসিআরে সিনেমা দেখছিলো রোকসানা। ভাত খেতে ডাকার অজুহাতে এসময় স্বপন তাকে ডেকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে স্বপন ও তার দুই সহযোগী রোকসানাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী অতুল হালদারের বাড়ির টয়লেটের স্লাবের নিচে ট্যাংকিতে রোকসানার মরদেহ ফেলে দেয় স্বপন ও তার সহযোগীরা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরদিন সকালে সেখান থেকে রোকসানার মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা।
এ ঘটনায় একই বছরের ১৬ মার্চ রোকসানাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও তার মরদেহ গুমের অভিযোগে থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন রোকসানার বড় ভাই লালন ফকির। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার এসআই আব্দুল হাকিম ২০০৩ সালের ২৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষগ্রহণ শেষে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে দণ্ড দেন।
একইসঙ্গে মৃতদেহ গুম করার অপরাধে তিনজনের প্রত্যেককে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া প্রধান আসামি স্বপন হাওলাদারকে নারী ও শিশু নির্যাতনের ২০০৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।