৫ জুন ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০১৭, ১৬:৩১

অনলাইন ডেস্ক

মালিবাগে নিজ ফ্ল্যাটে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ৫ জুন (সোমবার) ঘোষণা করা হবে।

স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর গত ৭মে শুনানি শেষে মামলাটি যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়। এ আদালতে কাল সোমবার মামলাটির রায় ঘোষণা করা হবে বলে আদালত সূত্র জানায়।

আপিল শুনানিকালে এ মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত ঐশীর বক্তব্য শুনে হাইকোর্ট। গত ১০ এপ্রিল কারাগার থেকে হাইকোর্টে হাজির করে বিচারপতির খাসকামরায় তাঁর বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জহিরুল হক। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি শুনানি করেন।

বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আদেশ দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মেয়ে ঐশী রহমানের খালাস চেয়ে আনা আপিল শুনানির জন্য ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর গ্রহণ করে হাইকোর্ট। এরপর মামলার পেপার বুক প্রস্তুত করা হয়। 

গত ১২ মার্চ ডেথ রেফারেন্স ও মামলায় আনা আপিল শুনানি শুরু হয়। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আদেশ দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মেয়ে ঐশী রহমান খালাস চেয়ে ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর আপিল করেছেন। মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আদেশ দিয়ে বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ের নথিসহ ডেথ রেফারেন্স ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। 

এর আগে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয় ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে খুনের ঘটনার পর ঐশীদের আশ্রয় দেয়ার অপরাধে দু’বছরের কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাস কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। অপর আসামি ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি খালাস পেয়েছেন। 

দু’টি খুনের জন্য পৃথক দু’টি অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। দু’টি অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা করে ঐশীকে দুইবার ফাঁসি ও দু’বারে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফৌজদারি আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালত ঘোষিত ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হলে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি নিতে হয়। 

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। গত বছরের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন। অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার শিশু আদালতে হয়।