যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ
প্রকাশ | ২৮ মে ২০১৭, ০৪:৫৯
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মোহনপুর গ্রামে রুনা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৬ মে (শুক্রবার) রাতে পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামীর বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
নিহত রুনা আক্তার (২২) চান্দিনা উপজেলার মোহনপুর গ্রামের আবু মুসার স্ত্রী ও ঘাটিপাড়া গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এ ঘটনায় চান্দিনা থানায় রুনার বাবা বাদী হয়ে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি, দুই ননদ ও এক দেবরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক।
রুনার বাবার পরিবার, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে রুনা আক্তারের সঙ্গে আবু মুসার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কনেপক্ষ পাঁচ লাখ টাকা দেয়। ওই টাকায় দুবাই যান মুসা। ১৫ দিন আগে বিদেশ থেকে দেশে ফেরেন মুসা। এরপর শাশুড়ি ও স্বামী মিলে রুনাকে আরও পাঁচ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় ২৬ মে (শুক্রবার) সকালে রুনার সঙ্গে তাঁর স্বামী ও শাশুড়ির ঝগড়া হয়। এর জের ধরে বিকেল ৫টায় রুনাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ খাটে শুইয়ে রাখা হয়। পরে রুনার দুই বছরের মেয়ে মীমকে নিয়ে বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। সন্ধ্যা সাতটায় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পান রুনার পরিবারের সদস্যরা। রাত ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রুনার লাশ উদ্ধার করে চান্দিনা থানায় নিয়ে আসে। ২৭ মে (শনিবার) সকালে রুনার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে রুনার চাচি মমতাজ বেগম বলেন, ‘যৌতুকের জন্য রুনাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়। কিন্তু অপরাধীরা ওড়না দিয়ে রুনার লাশ বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলাইতে পারে নাই। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে রুনার স্বামী আবু মুসার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চান্দিনা থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। ঘটনার পর থেকে বাড়ির লোকজন লাশ ফেলে রেখে গা ঢাকা দিয়েছেন। নিহত গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটি পিটিয়ে হত্যা নাকি অন্য কিছু তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে।