স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ!
প্রকাশ | ২৮ মে ২০১৭, ০৪:২৩ | আপডেট: ২৮ মে ২০১৭, ১৬:৩৭
নোয়াখালীর সেনবাগে বেড়াতে এসে এক গৃহবধূ (২২) ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। একদল বখাটে ওই গৃহবধূর স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে ২৬ মে (শুক্রবার) রাত থেকে ২৭ মে (শনিবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিজাম উদ্দিন (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ২৭ মে (শনিবার) দুপুরে স্বামী-স্ত্রী দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আটক নিজাম উদ্দিন উপজেলা ৪নং কাদরা ইউনিয়নের কানুরচর গ্রামের এবাদ উল্লা মুন্সি বাড়ির মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। উদ্ধার ও আটকৃতদের থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্ত্রীকে নিয়ে দুই দিন আগে সেনবাগে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার এক তরুণ। রুবেল ও সোহেল নামের যুবলীগের স্থানীয় দুই কর্মী ২৬ মে (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ওই নবদম্পতির বিয়ে হয়নি—এমন অভিযোগ তুলে তাঁদের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই নবদম্পতি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা চলে যান।
ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর রুবেল ও সোহেলের সহযোগী একই এলাকার রিয়াজ, নুরনবী, মিজান, সাইফুল, শহীদ, ইসমাইল, স্বপন, কপিল উদ্দিন কচি ও কামাল অস্ত্রের মুখে নবদম্পতিকে তুলে একটি মাছের খামারে নিয়ে যান সেখানেও চাঁদা নিয়ে নানা দেন-দরবার চলে। চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সন্ত্রাসীরা গৃহবধুর স্বামীকে বেঁধে রেখে ফিরোজের মাছের প্রজেক্টের একটি টিনের ঘরে রাতভর ও শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর ভাষ্য, তারা স্বামী-স্ত্রী চট্টগ্রামে পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিন মাস আগে তারা নিজেরা বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে এসে এ ঘটনার শিকার হলেন তিনি। ২৭ মে (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে তারা আত্মীয়র বাড়িতে গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ২৭ মে (শনিবার) বেলা দেড়টার দিকে আত্মীয়র বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। একই সময় পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিজাম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পলাতক থাকায় রুবেল ও সোহেলের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আ স ম জাকারিয়া আল-মামুন। তিনি বলেন, ‘যত দূর শোনা গেছে, সেখানে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দলের নামধারী কিছু ছেলে ধান্দাবাজি করতে গিয়ে ঝামেলা বাধিয়েছে। নিজাম নামের যাকে আটক করা হয়েছে, সেও নিরপরাধ।’
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ চৌধুরী বলেন, স্বামীর আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে এসে এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ওই দম্পতির কাছে প্রথমে চাঁদা চেয়েছিলেন। না পেয়ে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন তারা। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নিজাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।