ভাস্কর্য অপসারণ: প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ | ২৭ মে ২০১৭, ১৫:২১
সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য সরানোর ঘটনায় যারা প্রতিবাদ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগও এনেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে ২৬ মে (শুক্রবার) বিক্ষোভ করার সময় আটক চারজন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে এসআই মোহাম্মদ মোফাক্কারুল ইসলাম ২৬ মে (শুক্রবার) রাতে মামলাটি করেছেন। এতে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি মোর্শেদ হালিম, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী জয় ও উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফ নূরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
২৭ মে (শনিবার) তাদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে ২৬ মে (শুক্রবার) দুপুরের দিকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্র ইউনিয়ন, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও ব্লগার,সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, গণজাগরণ মঞ্চ, ছাত্র-শিক্ষক-লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী, নাগরিকবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রঙিন পানি ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন ১০ জন। এ সময় চারজন আটক করে পুলিশ।
ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটক বরাবর লিলি ফোয়ারায় ভাস্কর্যটি বসানো হয়। দেড় মাসের মাথায় এটিকে গ্রিক দেবীর মূর্তি দাবি করে অপসারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে লিখিত আবেদন জানান আওয়ামী ওলামা লীগ। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী বিবৃতি দিয়ে ভাস্কর্যটি অপসারণের দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে তাঁরা কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন।
এরপর হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন ভাস্কর্যটির বিরোধিতায় নামে। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন এক দল ওলামার সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে এর নান্দনিক ‘ত্রুটির’ পাশাপাশি জাতীয় ঈদগাহের কাছে অবস্থানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাকারীরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মৌলবাদীদের সঙ্গে আপস করছে সরকার এবং এতে ধর্মীয় মৌলবাদ আরও উৎসাহিত হবে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটি সরানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের মূল চত্বর থেকে সরিয়ে ভাস্কর্যটি এখন ত্রিপলে মুড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের বর্ধিত ভবনের পেছন দিকে রাখা হয়েছে।