মেট্রোরেল ফার্মগেট পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৬, ১৪:৪৮

অনলাইন ডেস্ক

মেট্রোরেল প্রকল্পে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত করা হলেও তা ফার্মগেট পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২৬ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মেট্রোরেলের প্রথম অংশের (উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত) নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ ম্যাস র‌্যপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাতাদের কাছে অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ফার্মগেট একটি জংশন পয়েন্ট। সেখান থেকে সারা ঢাকা যোগাযোগ করা যায়। মেট্রোরেল সেখানে গেলে আরও বেশি মানুষ উপকার পাবে। মেট্রোরেলেরও ভালো পয়সা আয় হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পুরো ঢাকাকে বাস ও রেলপথের অধীনে আনতে চাই। এজন্য এমআরটি সঙ্গে বিআরটি নির্মাণ কাজ শুরু করেছি।’

তিনি জানান, এমআরটি উত্তরা থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত যাবে। এতে ৬০ হাজার যাত্রী উত্তরা থেকে মতিঝিল মাত্র ৩৮ মিনিটে যেতে পারবে। অর্থের সাশ্রয়ের পাশাপাশি সময়ও কম লাগবে। এ সময় শেখ হাসিনা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেন করারও ঘোষণা দেন।

মেট্রোরেলের রুট উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে। এ অংশেরই কাজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হল আজ। আর ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি অংশ মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

মেট্রোরেল তৈরির মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশ্বমানে উন্নীত হওয়ায় যানজট কমে যাবে। একই সঙ্গে নিরাপদ, দ্রুত, ব্যয় সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব ও আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তিসমৃদ্ধ গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।

জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের ৯টি স্টেশন থাকবে। স্টার্ট পয়েন্ট মেট্রো ডিপো থেকে যাত্রা শুরু করে প্রথমে উত্তরা নর্থ, এরপর পর্যায়ক্রমে উত্তরা সেন্টার, উত্তরা সাউথ, পল্লবী, আইএমটি, মিরপুর-১০, কাজিপাড়া, তালতলা হয়ে আগারগাঁও।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ১৬টি স্টেশন হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও মোড়, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, শাপলা চত্বরে। প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পর স্টেশনে থামবে।

জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১ নভেম্বর মেট্রোরেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ১১ জুলাই ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে ২০২০ সালে মধ্যেই আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশা ব্যক্ত করেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্তু থাকবে ৭টি স্টেশন। এগুলো হচ্ছে- বিজয়সরণি, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (টিএসসি), বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল শাপলাচত্বর।

মেট্রোরেলের ঘণ্টায় গতি হবে গড়ে ৩২ কিলোমিটার (সর্বোচ্চ ১শ’ কিলোমিটার)। এই রুটে চলাচল করবে মোট ১৪টি ট্রেন। প্রতিটিতে ৬টি করে বগি থাকবে। প্রতিটি ট্রেনে ৯৪২ জন যাত্রী বসবে এবং ৭৫৪ জন দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবে। প্রতি ৪ মিনিট পরপর ট্রেনটি ছেড়ে যাবে।

পুরো ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকি ৫ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।