ধরা পড়েছে নাঈম আশরাফ
প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৭, ২২:৪৩
বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামী আসামি নাঈম আশরাফ বা হাসান মোহাম্মদ হালিমকে মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, “পুলিশ সদর দপ্তরের একটি টিম আজ ১৭ মে (বুধবার) রাত পৌনে ৯টার দিকে হালিম ওরফে নাঈম আশরাফকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।”
এর মাধ্যমে আলোচিত এই ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের ১১ দিনের মধ্যে পাঁচ আসামির সবাই গ্রেপ্তার হলেন।
এর আগে গত ১১ মে এই ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান শফিক সিলেটে গ্রেপ্তার হন।
তার চার দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার আরও দুই আসামি সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী এবং গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনকে।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের হালিম নাম বদলে ঢাকায় নাঈম আশরাফ নামে ‘ই-মেকার্স’ নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। গত ৬ মে মামলার পর গণমাধ্যমে নাঈমের ছবি দেখে তাকে হালিম বলে শনাক্ত করেন সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের গাইন্দাইল গ্রামের বাসিন্দারা। হালিম ওই গ্রামের ফেরিওয়ালা আজমদাজ হোসেনের ছেলে। এলাকায় প্রতারক হিসেবে তার পরিচয় ছিল।
গ্রামবাসী জানায়, হালিম প্রভাবশালী বিভিন্ন জনকে তার বাবা পরিচয় দিয়ে নানা সুবিধা আদায় এমনকি বিয়েও করেছিল দুই বার।
নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে হালিম এলাকায় পোস্টার-ব্যানার লাগালেও সংগঠনে তার কোনো পদ ছিল না বলে জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাজীপুরের নেতারা।
আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতের সাবেক স্ত্রী ফারাহ মাহবুব পিয়াসাও সাফাতের সঙ্গে নাঈমের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে সাফাত ও নাঈম দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এসময় বাকি বাকি তিনজন তাদের সহায়তা করে।
আসামিদের মধ্যে সাদমান রেগনাম গ্রুপ ও পিকাসো রেস্তোরাঁর অন্যতম মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে। রেইনট্রি হোটেলটির মালিক আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বি এইচ হারুনের সন্তানরা।
অভিযোগকারী তরুণীদের দাবি, সেদিন রেইনট্রি হোটেলে তাদের সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় ও এর ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর থেকে নাঈম ও সাফাত তাদের নানা হুমকির মধ্যে রাখে। পারিবারিক লোকলজ্জার কথা চিন্তা করে ও হুমকির ভয়ে তারা এতদিন মামলা করার সাহস পাননি।