রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা
প্রকাশ | ১৩ মে ২০১৭, ১৯:৩৪
ঠাকুরগাঁও থেকে ট্রেন আসছে। ঠিক এ সময় এক নারী তার কোলের শিশুটিকে রেললাইনে শুইয়ে দিয়ে নিজে ঝাঁপ দিলেন। মুহূর্তেই মা-মেয়ে ওপর ট্রেন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেন বলে জানালেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রশিদুল ইসলাম (৪৪)।
১৩ মে (শনিবার) দুপুর সোয়া ১২টা পঞ্চগড় সদর উপজেলার বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী রশিদুল বলেন, আমরা কয়েকজন রেললাইনের ধারে বাঁশবাগানের ভেতর কার্ড খেলছিলাম। দুপুর সোয়া ১২টায় উত্তরা নামের এই লোকাল ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড়ে আসছিল। এমন সময় এক নারী কোলের এক শিশুকে রেললাইনের ওপর শুইয়ে দিয়ে নিজেও ঝাঁপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের ওপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়। ঘটনাটি কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু শেষ হয়ে যায়। আমাদের করার কিছুই ছিল না।
নিহত মা-মেয়ে আটোয়ারী উপজেলার বারো আউলিয়া গ্রামের শ্যামলী বসাক (২২) ও তার দুই বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু পবিত্রা সেন মায়া।
নিহত শ্যামলী বসাকের বাবা অরুণ বসাক বলেন, তিন বছর আগে ঠাকুরগাঁও জেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের রুহিয়া আসানপুর এলাকার প্রদীপ সেনের সঙ্গে শ্যামলীর বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর যেতে না যেতে নির্যাতনের শিকার হয়ে গর্ভাবস্থায় বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন শ্যামলী। এরপর সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু শিশুটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রতি সপ্তাহে শ্যামলী জেলা শহরের প্রতিবন্ধী হাসপাতালে যান। আজও চিকিৎসার কথা বলেই বের হন।
গত দুই বছর থেকে তিনি একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হাসান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, স্বামীর ওপর রাগ করেই আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। বিষয়টি জিআরপি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।