‘এরা সর্প হইয়া দংশন করে, ওঝা হইয়া ঝাড়ে’
প্রকাশ | ২২ জুন ২০১৬, ১৭:৫১
"শক্তিধর দেশগুলোকে উদ্দেশ্য করে দুটো কথা বলতে চাই। সর্প হইয়া দংশন করে, ওঝা হইয়া ঝাড়ে। তারা লাদেনেকে পালাপোষা করেন, আবার প্রয়োজন ফুরালে বডিব্যাগ বানিয়ে সমুদ্রে ফেলে দেয়", বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যা নিয়ে ‘শক্তিধর’ দেশগুলো দ্বিচারিতা করছে দাবি করে এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
বাংলাদেশে জঙ্গি কায়দায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড এবং তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষাপটে বুধবার সংসদে বাজেট নিয়ে আলোচনায় মতিয়া চৌধুরি বলেন, “সেই একই শক্তি এবং দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, গুপ্তহত্যায় মেতে উঠেছে। আমাদের দেশের চোরাগোপ্তা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সময়ে অসময়ে শক্তিধর এই সমস্ত দেশের আহা-উহুর সীমা নাই।”
গত দেড় বছরে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা ইন্টারনেটে এলেও সরকারের পক্ষ থেকে এই আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতার খবর নাকচ করা হচ্ছে।
এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে সমকামীদের নাইটক্লাবে এক বন্দুকধারীর গুলিতে ৪৯ জন প্রাণ হারানোর পর আইএস ওই হামলাকারীকে নিজেদের যোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়ে ইন্টারনেটে বার্তা দেয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার ওই ব্যক্তির আইএস সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানিয়েছে। ওই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে মতিয়া বলেন, “কথায় বলে ‘ঘুটে পোড়ে গোবর হাসে’, আমরা কিন্তু হাসি না, আমরা কষ্ট পাই। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বর্তমানে সবারই কপালে একটু ভাঁজ পড়েছে। বানরের লেজে আগুন দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল অন্যের বাড়িতে আগুন লাগাতে। এখন সেই আগুন নিজেদের বাড়িতেও ছড়িয়ে পড়েছে”।
জঙ্গিবাদী তৎপরতার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে তিনি বলেন, “সেই একই বিএনপি-জামাত, মুসলিম বিশ্ব কর্তৃক ত্যাজ্য ইসরাইলি রাষ্ট্রের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করে চেষ্টা করছে বাংলাদেশে ত্রাস ও নৈরাজ্য কায়েম করতে।”
জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়ার জন্য আলেমদের ধন্যবাদ জানিয়ে এই মন্ত্রী বলেন, “ফতোয়ার জন্য দস্তখত সংগ্রহেও বাধা দিয়েছিল জঘন্য খুনি জঙ্গিরা। এই জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডে সারা বিশ্বে শান্তির ধর্ম ইসলামে বিশ্বাসী মুসলমানদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।”
বাজেটের উপর আলোচনায় দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলার পর কৃষিমন্ত্রী মতিয়া সঞ্চয়পত্রে সুদের হারে ‘বৈষম্য’ কমানোর তাগিদ দেন।
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুই ধরনের সুদের হার। সরকারি কর্মচারীরা পায় বেশি হারে সুদ। সাধারণ মানুষ পায় কম হারে সুদ। এটি কেন?”
তিনি বলেন, “আমি সঞ্চয়পত্র ক্রয়কারীদের মধ্যে যারা বৃদ্ধ/বৃদ্ধা তাদেরকে ‘বয়স্ক ভাতা’ দেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীকে তাগিদ দেব। কারণ এই স্তরের লক্ষ লক্ষ বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে।”