৯০ লাখ হাওরবাসী খাদ্যঝুঁকির মুখে
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ১২:৫৯
সুনামগেঞ্জে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ খাদ্যসংকটের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ তীব্র এবং ৪০ লাখ হাওরবাসী মাঝারি ধরণের ঝুঁকির মুখে আছে। এক পরিবারে পাঁচজন করে সদস্য হিসাব করলে ১০ লাখ পরিবার বেশি সংকটের মুখোমুখি। তবে সরকারের তরফ থেকে খাদ্যসংকটের কথা স্বীকার করা হয়নি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ হাওর অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্মের (হ্যাপ) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হিসাবে হাওরের বন্যায় ৪০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ (৮ লাখ পরিবার) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ৫ লাখ ৭ হাজার পরিবার বা ২৫ লাখ মানুষ ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। অন্যদের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) এবং ১০ টাকা কেজি দরে ফেয়ার প্রাইসে চাল বিক্রি করবে মন্ত্রণালয়।
হাওর বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা, নাগরিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো হাওর এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, হাওর এলাকায় মোট ৪ লাখ ১ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে ফসল হয়। এর প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। এতে হাওরের ছয় জেলার ৪৭টি উপজেলার ৫ লাখ ৭ হাজার ৩১৮ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে গত ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) ক্ষয়ক্ষতির এই হিসাব পাঠানো হয়। এই হিসাব নিয়ে ২৮ এপ্রিল (শুক্রবার) আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে হাওর এলাকায় মোট ১০ লাখ ২০ হাজার হাঁস, প্রায় ৫২ হাজার মুরগি, ২২ হাজার ৬৪০টি ছাগল, ১ হাজার ৯২টি মহিষ, ১ লাখ ৪০ হাজার ৩২৪টি গরু রয়েছে। এসব গবাদিপশুর সারা বছরের খাবার ঘাস, খড় ও অন্যান্য খাদ্যের বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এ অবস্থায় কৃষকেরা গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।