নারী আইনজীবীর ওপর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হামলা
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৪৪
চট্টগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী পারভীন আক্তার পাপিয়াকে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা। আহত আইনজীবী পাপিয়া আগের দিনই বিয়ে করেন। এ ঘটনায় মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোলায়মানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২৬ এপ্রিল (বুধবার) আদালত প্রাঙ্গণেই বার কাউন্সিলের ফরম পূরণ করা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন পাপিয়া। আদালত চত্বরের রাস্তায় হুড়োহুড়ি করে পথ চলতে গিয়ে সোলায়মানের সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যক্তি তাকে কিল-ঘুষি মারেন। এতে নাক থেকে ঝর ঝর করে রক্ত বেরোতে থাকে।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। ঢাকার আদালতের অনেক আইনজীবীও পাপিয়াকে মারধরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিচার দাবি করেছেন।
ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান বলেন, অন্য কোনো পেশাজীবী এই হামলার শিকার হলে তারা কাজ বন্ধ রেখে ঠিকই আন্দোলন করত। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ সুযোগ নেই। তবে ঘটনাটি খুব বেদনাদায়ক। অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা উচিত।
এ বিষয়ে আরেক আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে লেখেন, আইনজীবীর ওপর হামলাকারী শনাক্ত। নাম সোলাইমান রুবেল। পাপিয়া গত ২৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও হাতের মেহেদি এখনও শুকায়নি। রাস্তা ছেড়ে দাঁড়াতে বলা, এটাই কি পাপিয়ার অপরাধ?
তিনি আরও বলেন, আমরা আইনজীবী সরকার স্বীকৃত প্রথম শ্রেণির নাগরিক, কোর্ট অফিসার। অথচ আমাদের কোর্ট প্রাঙ্গণে আমাদের ওপর হামলা। রাস্তা ছেড়ে দাঁড়াতে বলাতে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা উচিত।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ বলেন, বার কাউন্সিলের নিবন্ধন পরীক্ষায় ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিনে ২৬ এপ্রিল (বুধবার) চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে গিয়েছিলেন পাপিয়া। পথে সোলায়মানের সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এ সময় বিষয়টির প্রতিবাদ করলে কথাকাটাকাটি হয়। এরপর সোলায়মান তাকে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দেন। পরে অন্য আইনজীবীরা সোলায়মানকে ধরে আইনজীবী সমিতির অফিসে নিয়ে যান।
হামলার ঘটনায় তার স্বামী সিরাজুল ইসলাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এইচ এম জিয়াউদ্দিন বলেছেন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোলায়মান দোষী প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোলায়মানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিচারিক হাকিম। ২৮ এপ্রিল (শুক্রবার) তার পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি।