হাওরে মহাদুর্যোগ: শনির হাওরের ধানও ভেসে গেল পানিতে
প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:৫৮
বাঁধ রক্ষার কাজ করেও শেষ রক্ষা হল না শনির হাওরের লালুর গোয়ালা বাঁধটির। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ হাওরপাড়ের কৃষকরা।
২২ এপ্রিল (শনিবার) গভীর রাতে শনির হাওরের লালুর গোয়ালা বাঁধের উত্তর পাশের প্রায় ৪০ ফুট জায়গা ভেঙ্গে এ হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এতে করে পানিতে তলিয়ে গেছে শনি হাওরের প্রায় ৮ হাজার হেক্টর বোরো ধান।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে নদীর পানি উপচে উপজেলার সবগুলো হাওর পানিতে তলিয়ে গেলেও একমাত্র সম্বল ছিল শনির হাওরটি। ফলে আশায় বুক বেঁধে হাওর পাড়ের শত শত কৃষক গত ২৫ দিন ধরে শনি হাওরের প্রত্যেকটি বাঁধে দিন রাত পরিশ্রম করছে। কিন্তু সেই চেষ্টাটুকুও অবশেষে ব্যর্থ হল।
হাওরের কিছু ধান কাটার উপযুক্ত হলেও প্রতি শ্রমিকের মজুরী হাজার টাকা হওয়ায় অনেক কৃষকই ধান কাটেনি। যার ফলে দিনের আলোতেই কৃষকের চোখের সামনে পানিতে ডুবছে সারা বছরের জীবন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র সোনালী ফসল।
এছাড়া গত তিনদিনে বারহাট্টা আটপাড়া, কেন্দুয়া, নেত্রকোনা সদর ও পূর্বধলা উপজেলার পায় ৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে সরকারি হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার হেক্টর। সব মিলে জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বোরো জমির পরিমাণ হচ্ছে ৫৪ হাজার হেক্টর।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুছ ছালাম জানান, শনির হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর বোরো জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শনি হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করছে এ সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি।
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে ও কোথাও কোথাও বাঁধ না হওয়ায় একের পর এক হাওর তলিয়ে যাওয়ার পর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার লাখ লাখ বোরো চাষী সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। জেলাজুড়ে বিভিন্ন ব্যক্তি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, কৃষক সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান।