শ্লীলতাহানির চেষ্টায় ছাত্রীর আত্মহত্যা
প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:১৭
স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শিখে বড় হবার, পরিবারের অভাব দূর করার। কিন্তু 'শ্লীলতাহানি'র অপমান সহ্য করতে না পেরে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে মুনিশা।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উৎরাইল গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের মোজাহার হোসেনের মেয়ে মুনিশা বেগম (১৭)। উপজেলার নান্দাইল দীঘি কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল সে। গত ২০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।
পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় বখাটে উৎরাইল গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে শাহিন হোসেন (২৫) গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে একা পেয়ে মুনিশার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। অপমান সহ্য করতে না পেরে সেদিন রাতেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায়ই মুনিশাকে উত্ত্যক্ত করত শাহিন। এ ব্যাপারে মুনিশার মা-বাবা অভিযোগ করলেও শাহিনের পরিবার বিষয়টিকে পাত্তা দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার সকালে মুনিশার বাবা মোজাহার হোসেন জরুরি কাজে বগুড়ার শিবগঞ্জে যান। আর মা মনোয়ারা বেগম ১০ টাকা কেজি দরের চাল কিনতে পুনট ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) যান। এসময় বাড়িতে একা পেয়ে মুনিশার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে শাহিন। ক্ষোভে, অভিমানে ওই দিন রাত আটটার দিকে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মুনিশা।
খবর পেয়ে কালাই থানা-পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মুনিশার বাবা মোজাহার আলী বলেন, "বৃহস্পতিবার আমি ও আমার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শাহিন বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে শ্লীলতাহানি করে এবং খারাপ প্রস্তাব দেয়। মুনিশা তা সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে"।
মনোয়ারা বেগম বলেন, পুনট ইউপি থেকে ফেরার পর মেয়ের কাছে জানতে পারেন, শাহিন বাড়িতে ঢুকে মুনিশাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মুনিশার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শাহিন, তার বাবা মন্টু মিয়া ও মা ফাহিমা বেগমকে আসামি করে কালাই থানায় মামলা করেছেন মোজাহার হোসেন। তবে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।