মা ডেকে ধর্ষণ, মা ডেকেই অসহযোগিতা!
প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৭, ০০:১৬ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭, ০০:২১
মা ডেকে ঘনিষ্ঠতা করে পরে তাকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন খুলনার এক কলেজছাত্রী। মামলার অভিযুক্ত আসামী এতদিন কারাগারে ছিলেন। একইভাবে মা ডেকে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন আইনজীবী। কিন্তু তারই অসহযোগিতার ফলে সেই আসামী জামিন পেয়েছেন বলেও এবার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত ১৫ মার্চ আসামি এনামুল হক টিটোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রী। ওই দিনই এনামুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ এপ্রিল এনামুলকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার আসামি এনামুল হক টিটোর জামিন আবেদনের শুনানি ছিল। কিন্তু মামলা চলাকালে ঐ কলেজছাত্রীর পক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আদালতেই হাজির হননি খুলনায় ব্লাস্টের সমন্বয়কারী ও আইনজীবী অশোক কুমার সাহা। বাদীপক্ষের কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় সহজে জামিন পেয়ে যান আসামি।
ওই শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করেন, সকাল সাড়ে ১০টায় মামলা আদালতে ওঠার কথা ছিল। এ কারণে মেয়েকে নিয়ে তিনি আদালত প্রাঙ্গণে যান। কিন্তু সেখানে ব্লাস্টের আইনজীবী অশোক কুমার সাহাকে না পেয়ে ফোন করেন। আইনজীবী তখন তাদের নিজের দপ্তরে ডেকে নেন। সেখানে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বিভিন্ন প্রলোভনও দেখানো হয়। কিন্তু তারা রাজি না হওয়ায় ও মামলা আদালতে ওঠার সময় হয়ে যাওয়ায় অশোক কুমার সাহা তাদের আদালতে চলে যেতে বলেন। সঠিক সময়ে তিনি আসবেন বলে জানানো হলেও তিনি আসেন প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে। ততক্ষণে জামিন হয়ে যায় আসামির।
অভিযোগকারী কলেজশিক্ষার্থী দাবি করেন, কালক্ষেপণের অজুহাতে তার সঙ্গে আইনজীবী প্রতারণা করেছেন।
কলেজছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, "ব্লাস্টের আইনজীবী অশোক সাহাও মেয়েকে মা ডেকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আসামির আইনজীবীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জামিন পেতে সহযোগিতা করেছেন বলে আমাদের মনে হচ্ছে"।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অশোক কুমার সাহার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ শুনেছি। এই আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এখন পর্যন্ত এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, তাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।