‘বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিরসন সম্ভব’
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:২৩
জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলনের সভাপতি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বৈষম্য দূরীকরণের মধ্য দিয়েও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে নিরসন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বৈষম্য নিরসন হচ্ছে এবারের আইপিইউ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য সেটার সাথেও সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের একটা গভীর যোগ রয়েছে। কেননা আমরা যদি বিশ্বের দারিদ্য্রকে সঠিকভাবে বিমোচন করতে না পারি, ধনী-দরিদ্রের প্রার্থক্যকে কমিয়ে আনতে না পারি, অসমতা যদি বাড়তেই থাকে এবং আমাদের জনগোষ্ঠী যদি সম্ভাবনা ও সুযোগের জায়গাগুলো থেকে বঞ্চিত থাকে তাহলে তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। এই কারণেই বৈষম্য দূরীকরণের মধ্য দিয়েও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে নিরসন করা যায়।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নিজ কক্ষে ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এখন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে সংসদ সদস্যরা এই সম্মেলনকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমি মনে করি এটা একটা উর্বর ক্ষেত্র যেখানে এই সমস্যাটি নিয়ে একটি ফলপ্রসু আলোচনা হতে পারে।’
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস কেন সারাবিশ্বে এভাবে ছড়াচ্ছে, বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সেটার কারণ খোঁজতে হবে এবং এটা খোঁজতে হলে আরো গভীরে যেতে হবে। মূল কারণগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে এবং এটার সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। এর সমাধ্যমেই বিশ্বের কাঙ্খিত শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
আইপিইউ সম্মেলনের সভাপতি বলেন, ‘বৈষম্য নিরসন ও সকলের জন্য একটি মর্যাদা সম্পন্ন জীবন’ এই লক্ষ্য নিয়ে এই সম্মেলনে সাধারণ আলোচনা হচ্ছে। এখানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখছেন। আজও এই বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়েছে। বৈষম্য নিরসনের পদ্ধতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবও এখানে রয়েছে। এটা করতে হলে কি ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন এবং কি ধরনের নীতি নির্ধারণ প্রয়োজন সেসব বিষয়ে বিভিন্নজন তাদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সেখান থেকেই ঢাকা ডিক্লারেশন যেটা গৃহিত হবে সেখানে সেই বিষয়গুলোকেই প্রতিপাদ্য হিসেবে আনা হবে। যাতে আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন দেশের সংসদের করণীয়গুলো কি এবং কি গাইডলাইনে হবে, সে বিষয়গুলোও ঢাকা ডিক্লারেশনে অনুসরণ করা হবে।
স্পিকার ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, ‘সিপিএ হচ্ছে কমনওয়েলথভূক্ত ৫২টি দেশের ১৮১টি সংসদ যেখানে জাতীয় সংসদ ও রয়েছে আবার প্রাদেশিক আইনসভাও আছে। কাজেই এর পরিধি একটু ব্যাপক। আইপিএ শুধু জাতীয় সংসদ নিয়ে কাজ করে না, আরো রুট লেভেলে কাজ করে। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কন্ট্রোল এই সিপিএর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। আইপিইউ ও সিপিএ এর সদস্যভূক্ত দেশগুলোর অনেকে দুটোরই সদস্য। নারীর ক্ষমতায়ন, সার্বিকভাবে পার্লামেন্টারি প্র্য্রাকটিস এন্ড প্রসিডিউর এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালীকরণে এই দুটি সংসদীয় ফোরামই কাজ করছে। সুতরাং এই দুটি সংসদীয় ফোরামের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে সমন্বয় করার বিষয়ে আমার আইডিয়া তুলে ধরেছি।’
স্পিকার বলেন, আইপিইউ’র ৪টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। এই স্থায়ী কমিটির সভাপতিরা সম্মেলনের প্রথম দিন সকালে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তাদের রিপোর্টগুলো উপস্থাপন করেছেন। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্থায়ী কমিটির সভায় কি কি বিষয়ে আলোচনা হবে তা নির্ধারণ করেছে। এর প্রেক্ষিতেই স্থায়ী কমিটিগুলো এই কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছে। আগামীকাল এসব আলোচনার ফিডব্যাক পাওয়া যাবে।
সূত্র: বাসস