ঐশীর মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে হাইকোর্টে হাজিরের নির্দেশ
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০১৭, ১০:৫৩
পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে সশরীরে হাজির করতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ১০ এপ্রিল (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ঐশীকে হাইকোর্টে হাজির করতে কারা মহাপরিদর্শককে (আইজি প্রিজনস) এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
আপিলের শুনানিকালে ৩ এপ্রিল (সোমবার) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত রায়ে বলেন, মেডিকেল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐশী রহমান হত্যার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। এবং বংশগতভাবে তারা মানসিক রোগী। তার দাদি, চাচারা বিকারগ্রস্ত। মেডিকেল রিপোর্টের সত্যতা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করতে তাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হলো।
তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির বিরোধিতা করে বলেন, ঐশীকে হাজির করা ঠিক হবে না। কেননা, মামলার এ পর্যায়ে তাকে হাজির করা হলে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। মামলার সাক্ষ্য, তদন্ত সবকিছু শেষে বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। হাইকোর্টে ঐশীকে হাজির করা হলে আদালতের মায়া জন্মাতে পারে। ঐশীর পক্ষে বা বিপক্ষে যেতে পারে। তাই তাকে হাজির করা ঠিক হবে না।
আদালত বলেন, আমরা শুধু মেডিকেল রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করার জন্য হাজির করতে বলেছি। শুধু তার মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করব। এ পর্যায়ে আদালত তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
ঐশীর আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির।
ঐশীর আইনজীবী আফজাল এইচ খান বলেন, আপিলে আমরা ২৫টি যুক্তি দেখিয়েছি। এর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হলো ঐশী হত্যাকাণ্ডের সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। এ ছাড়া ২১ নম্বর সাক্ষী ডা. নাহিদ মাহজাবীন মোর্শেদের সাক্ষ্য আমলে নেননি আদালত। তিনি তার সাক্ষ্যে বলেছেন, ঘটনার সময় ঐশীর মানসিক ভারসাম্য ছিল না। হত্যার আগে এক বোতল হুইস্কি খেয়েছিল ঐশী রহমান।
এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বাদি ঐশীর চাচা বলেছেন, তার ভাই নিহত মাহফুজুর রহমান বিয়ে করেছেন ১৯৯৪ সালে। মেয়ে ঐশীর জন্ম হয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯৯৬ সালে। এ ঘটনার সময় ঐশীর বয়স হয় ১৬ বছর। কিন্তু প্রসিকিউশন ১৯ বছর বয়স দেখিয়ে তাকে শিশু আইনে বিচার করতে দেয়নি। বাংলাদেশি ফৌজদারি আইন অনুযায়ী সে একজন কিশোরী। প্রাপ্তবয়স্ক হতে হলে তার ১৮ বছর দরকার হতো। এ ছাড়া একজন আসামিকে ডিএনএ টেস্ট করার জন্য ছয়টি এক্স-রে করতে হয়। সেখানে ঐশীকে মাত্র তিনটি টেস্ট করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এসব পরীক্ষার এক্স-রে কপি আদালতে উপস্থাপন না করে শুধু রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।