‘জঙ্গিরা ইসলামের বদনাম করছে’
প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০১৭, ১৭:০১ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭, ১৭:০৫
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলাম হামলা ও আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া সমর্থন করে না। যারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসের পথে গেছে তারা ইসলামের বদনাম করছে, মানসম্মান নষ্ট করছে। তারা যাতে এ পথ পরিহার করে সে চেষ্টা আপনাদের নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ পড়াশুনা করা। তাদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ পরিহার করতে হবে। অবিভাবক, প্রশাসন, ইমাম, শিক্ষকদের কাছে আমার আবেদন একটা ছেলে মেয়েও যেন জঙ্গিবাদের পথে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নিজের ছেলে মেয়ে কার সঙ্গে মেশে, কার সাথে চলে তা দেখতে হবে।
বুধবার বিকেল ৩টার দিকে ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ফরিদপুর ও আশপাশের জেলা নিয়ে আরেকটি বিভাগ করবো। আমাদের সে পরিকল্পনা আছে। এ এলাকায় পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে, কাজ শেষ হলে দক্ষিণ এলাকায় উন্নয়ন হবে। আমরা দক্ষিণ এলাকার মানুষ সব সময় অবহেলিত ছিলাম।’
জনসভার শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরেন। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে টাকা পয়সা খরচ করে গাড়ি কিনি আর বিএনপি-জামায়াত সরকার আন্দোলনের নামে সেগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করে। তারা লঞ্চ, ট্রেন পুড়িয়ে দেশের সম্পদ নষ্ট করে। এদেশের জনগণের উন্নয়নে তারা কোনও কাজ করেনি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করেন আপনারা। এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আজ দেখুন নৌকায় ভোট দিয়েছেন, উন্নয়ন হয়েছে। একটু আগে উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি উদ্বোধন করেছি। ২০০৮ সালেও উন্নয়ন করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে এদেশের কৃষকদের বিনামূল্যে সার দিয়েছি। দেশের খাস জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই দিয়েছি।’
এদিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টারে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান এলজিআরডিমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর তিনি জেলা সার্কিট হাউজে যান। এদিন তিনি ২০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলো হলো- ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নতুন ভবন, পল্লীকবি জসীম উদ্দীন সংগ্রহশালা, ফরিদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলোজি, শিশু একাডেমি, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফরিদপুর ৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের একাডেমিক কাম পরীক্ষা হল, সদর উপজেলাধীন চরকমলাপুর খেয়াঘাট থেকে বিল মামুদপুর স্কুল সড়কে কুমার নদীর ওপর ৯৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি সেতু, ভাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, বিএসটিআই ভবন, ভাঙ্গা থানা ভবন, মধুখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদর উপজেলা থেকে বাখুন্ডাজিসি হয়ে রসুলপুর ভায়া চর নিখুরদি সড়ক, ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মুন্সিডাঙ্গী কমিউনিটি ক্লিনিক, ৩৩/১১ কেভি হারুকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সামনে রেখে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো ফরিদপুরকে বিভাগ ঘোষণা, সিটি করপোরেশন ঘোষণা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।