‘জঙ্গি'দের আত্মসমর্পনের আহ্বান, অভিযানের প্রস্তুতি
প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৩:৪৩ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৭, ১৫:৩৭
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার ‘আতিয়া মহল’ নামে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। একইসাথে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঐ বাড়ি ঘিরে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাঁচতলা ঐ ভবনটি ঘিরে ফেলে বলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্তি কমিশনার রোকনউদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, “সকালের দিকে ওই বাড়ি থেকে পুলিশের দিকে গ্রেনেড ছোড়া হলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “সোয়াটের একটি দল হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছে। তারা এলে মূল অভিযান শুরু হবে”।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোরের দিকে ওই বাড়ির কাছে তারা বিস্ফোরণের শব্দ পান। পরে গুলির শব্দও শোনা যায়।
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ওই ভবন ঘিরে এবং আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে আছে পুলিশ। ওই ভবনের দিকে যাওয়ার দুটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ভবনের নিচতলার চার নম্বর ইউনিটে জঙ্গিরা আস্তান গেড়েছে বলে তারা সন্দেহ করছেন। আশপাশের ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আছিয়া ভিলার অন্যান্য ফ্ল্যাটে যে পরিবারগুলো আটকা পড়েছে, তাদের দরজা-জানালা বন্ধ করে ভেতর থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পুলিশের হ্যান্ড মাইক থেকে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালাতে গিয়েই শিববাড়ির ওই ভবনের সন্ধান পান তারা।
এদিকে ওই বাড়ির মালিক উস্তার আলী জানান, পাঁচতলা ওই ভবনে দুটি ইউনিটে ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তিন মাস আগে কাউছার আলী ও মর্জিনা বেগম নামে দুইজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দ্বিতীয় ইউনিটের নিচতলার চার নম্বর বাসাটি ভাড়া নেন। সে সময় কাউছার নিজেকে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন।
আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় জড়িত উস্তার বলেন, “সব নিয়ম মেনেই তাদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিও রাখা হয়েছে। তারা নিয়মিত ভাড়াও দিয়ে আসছে।”
উল্লেখ্য, পুরনো জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানকে ২০০৬ সালের ২ মার্চ এই সিলেটেরই পূর্ব শাপলাবাগের সূর্যদীঘল বাড়ি নামের এক ভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তবে এরপর দীর্ঘ সময়ে সিলেটে কোনো জঙ্গি হামলা বা হত্যাকাণ্ড অথবা কোনো জঙ্গি আস্তানার কথা শোনা যায়নি।