ডাস্টবিন কন্যার নাম হলো আনিশা
প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০১৭, ২০:১৮
জন্মের পর নাম তো দূরে থাক, মায়ের কোলও পায়নি শিশুটি। জায়গা হয়েছিল ময়লার স্তুপে। কিন্তু মনুষ্যত্বের এখনো হার হয়নি বলেই সে খুঁজে পেয়েছে কিছু আপনজন। ভালোবেসে তারা দিয়েছেন নামও।
গত ১১ মার্চ রাজধানীর শাহ আলী থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় আবর্জনা ফেলার উন্মুক্ত স্থান থেকে এ নবজাতককে উদ্ধার করেন মো. বিপ্লব হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি আক্তার। একটি বাজারের ব্যাগের মধ্যে ময়লা কাপড় দিয়ে প্যাঁচানো ছিল শিশুটি। সেই নবজাতক বর্তমানে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে (স্ক্যাবু)।
কিন্তু হাসপাতালের নার্সরা এই নবজাতককে আর ‘আননোন’ বলতে নারাজ, তাই তারা নাম দিয়েছেন আনিশা। আর যিনি এ নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন, সেই বিপ্লব হোসেন নাম দিয়েছেন আশা সিদ্দিকা জয়তী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘সবাই বলে ডাস্টবিনে পাওয়া শিশুটির কেউ নাই। কে বলল নাই? আমরা শুরু থেকে আছি, শেষ পর্যন্ত থাকব। কেউ যদি ওর দাবিদার হয়, তাহলে এক নম্বরে আছি আমি আর আমার স্ত্রী। আমরাই তো ওকে খুঁজে পাইছি।’
বিপ্লব হোসেন জানান, তাঁর জানামতে, এ পর্যন্ত চারজন অভিভাবক আদালতের কাছে এ নবজাতককে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। গত ২১ মার্চ আদালতে গিয়ে তারা শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। আবার ২৯ মার্চ শুনানির তারিখ আছে।
বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমার দুই ছেলে। আমার পরিবারে মেয়ে নেই বললেই চলে। তাই এ মেয়েকে চাই। আর আমার এলাকার সবাই আমার পক্ষেই ভোট দেবে। তবে আমি চাইলেই তো হবে না, আদালত যাকে দেন।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান মনীষা ব্যানার্জি বলেন, এ নবজাতককে এখন পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। ওর রক্তের অণুচক্রিকা (প্লাটিলেট) কমে যাচ্ছে। যখন ওকে পাওয়া যায়, তখন ওর ওজন ছিল ১ কেজি ৭০০ গ্রাম। তবে এখন ও খাবার হজম করতে পারছে। খাবারের পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে ধীরে ধীরে। প্রথম দিকে অন্য মায়েরা তাদের বুকের দুধ খাইয়েছেন, এখন বিকল্প ফর্মুলায় দুধ দেওয়া হচ্ছে।