জিডি করেও রক্ষা পায়নি আরিফা
প্রকাশ | ১৭ মার্চ ২০১৭, ১৩:৫৪
ব্যাংক কর্মকর্তা আরিফুল নেছা আরিফা বাস করতেন রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে। ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সকালে অফিসে যাবার সময় তাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলা অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
জীবনের নিরাপত্তা ছিলো না এই ব্যাংক কর্মকর্তার। নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগও (জিডি) করেছিলো আরিফা। কিন্তু তারপরও বাঁচতে পারেনি সে। তবে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি।
বোনের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন আরিফার বড় ভাই আল আমিন বুলবুলসহ পরিবারের সদস্যরা। সেখানে সাংবাদিকদের জানান, আরিফা ইডেন কলেজে যখন পড়াশুনা করতো তখন আমাদের দেশের বাড়ির রবিন নামে এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর তারা নিজেরাই বিয়ে করে। দুই মাস সংসার করার পর আরিফার উপর নির্যাতন শুরু করে রবিন। এরপর আমরা আরিফার মাধ্যমে জানতে পারলাম রবিন মাদকাসক্ত।
দিনে দিনে আরিফার উপর নির্যাতন বেড়েই চলে। এরপর আরিফা নির্যাতন সয্য করতে না পেরে নিজেই ডিভোর্স নিতে বাধ্য হয়। গত ৩/৪ মাস আগে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে মা আফিফা জামানকে নিয়ে সেন্ট্রাল রোডে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করে আরিফা। আমাদের বলে, আর পেছনে তাকাবো না। অফিস আর বাসা, তোমাদের নিয়েই ব্যস্ত থাকবো।
ভাই বুলবুল বলেন, এরপরও অফিসে যাওয়ার সময় বিভিন্নভাবে আরিফার পথ রোধ করতো রবিন। হুমকি দিতো। নিরাপত্তার জন্য তাই থানায় জিডিও করে আমার বোন।
এমনকি সিসি টিভি ফুটেজে আরিফাকে তার সাবেক স্বামী রবিনের সঙ্গেই বাসায় ঢুকতে ও বের হতে দেখা গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয় কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত জানান, আরিফা খুন হওয়ার স্থানটির সিসি ক্যামেরা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, আরিফা ও রবিন কিছু মালামাল নিয়ে বাসায় ডুকছে ও বের হচ্ছে। আমাদের ধারণা, বিয়ে বিচ্ছেদের পর তাদের ভেতর ফের ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সিসি ক্যামেরা দেখে এমনটিই মনে হচ্ছে।
ওসি বলেন, বাসার সিঁড়ির সামনেই রবিন তাকে হত্যা করেছে। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রবিনকে আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
জীবনের নিরাপত্তার জন্য আরিফা থানায় জিডি করেছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, কবে কখন করেছে বিষয়টি আমরা দেখছি।