‘শ্লীলতাহানির চেষ্টা’, জরিমানায় নিষ্পত্তি!
প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০১৭, ১৫:৩৯
এক মাদ্রাসাছাত্রীকে 'শ্লীলতাহানির চেষ্টা'র ঘটনায় শুধুমাত্র জরিমানা নিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ঐ মেয়ের পরিবার।
বুধবার গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামে ‘শ্লীলতাহানির চেষ্টার’ ঘটনায় সালিশে তিন তরুণকে জরিমানার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছে স্থানীয়রা।
এ ঘটনার পর স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী ঐ মেয়েটির পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আতংকে তার মাদ্রসায় যওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল ফারুক বলেন, “আমি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। আমরা এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি।”
মেয়েটি সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকালে তিনি একটি এনজিও থেকে তার মায়ের নামে উত্তোলন করা ঋণের টাকার কিস্তি দিতে পাশের বাড়ি যান। সেখান থেকে ফেরার পথে বানিয়ারী গ্রামের পান্নু চৌধুরীর ছেলে লেলিন চৌধুরী (১৯), কাইয়ুম চৌধুরীর ছেলে সাগর চৌধুরী (১৮) এবং তাদের আরেক সহযোগী (১৭) তার 'শ্লীলতাহানির চেষ্টা' করে।
স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনায় বুধবার রাতেই পার্শ্ববর্তী কান্দি গ্রামের রুস্তুম মাস্টারের বাড়িতে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুল্লাহ্ শেখ, এয়াকুব আলী শেখ ও স্থানীয় মাতুব্বর ইউনুচ ব্যাপারী, রিয়াজ চৌধুরী, গাউচ চৌধুরীর সমন্বয়ে এক সালিশ বৈঠক হয়। এই সালিশ বৈঠকে তিন জনকে মোট এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে এই ঘটনার নিষ্পত্তি করা হয়।
সালিশ বৈঠকের কথা স্বীকার করে মাতুব্বর রিয়াজ চৌধুরী বলেন, “আমি কিছু সময় সালিশ বৈঠকে থেকে পরে বাড়ি চলে আসি। শুনেছি অভিযুক্ত ৩ জনকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে ওই ছাত্রীর মা বলেন, “দুই মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার বড় মেয়েকে আর মাদ্রাসায় পাঠাব না। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। বখাটেরা আমার মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তারা যেন অন্য কোনো মেয়ের সাথে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে"।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বানিয়ারী গ্রামের এক যুবক বলেন, "তিন বখাটে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছে। এ অপরাধ ‘সালিশযোগ্য নয়’। এদের আইনের হাতে সোপর্দ করে বিচার করতে হবে"।