নারী সংহতির নারী দিবস পালন
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৭, ২৩:১৪
৮ মার্চ (বুধবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও সংগঠনের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেল ৫টায় শাহাবাগ জাদুঘরের সামনে থেকে সমাবেশ এবং সমাবেশ শেষে মশাল মিছিল করেছে নারী সংহতি।
তাসলিমা আখ্তারের সভাপতিত্বে এবং জান্নাতুল মরিয়মের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক কানিজ ফাতেমা।
সমাবেশে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনের সংযোজনী ১৯ নং ধারা বাতিল এবং পাড়া-মহল্লাসহ সর্বত্র ডে কেয়ার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান বক্তারা।
বক্তারা বলেন, নিউইয়র্কের সুচ কারখানার নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের ফল নারী দিবস, এর শত বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। মজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, শ্রমঘণ্টা, নারীর ভোটাধিকার দাবি ছিল নারী দিবসের শুরুর সময়কার দাবি। আজকে আমাদের দেশে পোশাক শ্রমিকসহ মধ্যবিত্ত নারীরা অর্থনৈতিক পেশায় অধিক হারে যুক্ত হলেও নাগরিক হিসেবে, মানুষ হিসেবে নারী এখনও অধিকার বঞ্চিত। সম্প্রতি ২৭ ফেব্রুয়ারি সংসদে পাস হওয়া বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর বিশেষ বিধান তারই নজির। এ আইনে ১৮ এর নিচে নারী শিশুর বিয়ের আইনি স্বীকৃতি রাখা হয়েছে বিশেষ বিধানের নামে।
আইনের ১৯ নং ধারার এই বিশেষ বিধানের তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়ে নারী নেতারা বলেন, আইনের ১৯ ধারায় উল্লেখ আছে ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, কোন বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশক্রমে এবং মাতা-পিতার বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ে সম্পাদিত হলে তা এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।’ অর্থাৎ এই আইনের মধ্য দিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের বিয়ের আইনি স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ একই সাথে ডে কেয়ার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব বিষয়ে বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের শ্রমজীবী এবং মধ্যবিত্ত নারীদের নাগরিক এবং মানুষ হিসেবে অধিকারের সমতা আনা এবং নির্বিগ্ন কর্ম পরিবেশের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বা ডে কেয়ার প্রতিষ্ঠা জরুরি দাবি।
তারা বলেন, বর্তমানে এ দেশে প্রায় দুকোটি নারী অর্থনৈতিক কাজে জড়িত। ভবিষ্যত শ্রম বাজারে যুক্ত হতে পারে এমন সংখ্যা আরো বহু গুণ। অথচ সরকারি হিসেবে, দেশে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে এবং রাজস্ব বাজেটের আওতায় ঢাকা ও অন্যান্য জেলা শহরে মাত্র ৪৮টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে, যার অধিকাংশের মান নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। অর্থাৎ প্রতি ৩ লাখ ৮৫ হাজার শিশুর জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ একটি করে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নিরাপদ শৈশব নিশ্চিতের পাশাপশি নারী এবং বিশেষভাবে শিশুর সুস্বাস্থ্যর জন্যেও জরুরি।