শাজনীন হত্যা: শহীদের ফাঁসির রায় বহাল
প্রকাশ | ০৫ মার্চ ২০১৭, ১৩:২৪
শাজনীন তাসনিম রহমান হত্যা মামলায় আসামি শহীদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় পর্যালোচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তা বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রবিবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়।
চূড়ান্ত বিচারেও প্রাণদণ্ড বহাল থাকায় নিয়ম অনুযায়ী শহীদ এখন কেবল নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। প্রাণভিক্ষার আবেদনের নিষ্পত্তি হলেই সরকার কারাবিধি অনুযায়ী দণ্ড কার্যকর করবে।
আদালতে শহিদের পক্ষে রিভিউ শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এস কে সাহা। তার সঙ্গে ছিলেন মনোজ কুমার ভৌমিক।
রায়ের পর মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, “রিভিউ রায় প্রকাশের পর ক্লায়েন্টের নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী প্রাণভিক্ষার আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
এর আগে ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর শাজনীন হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ 'শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে' শহীদ সহ মোট ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এরা হল শাজনীনদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, হাসানের সহকারী বাদল, শাজনীনদের বাড়ির পরিচারক শহীদ, কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল ও গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন।
আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) ওই বছরই মামলাটি হাই কোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিলও করেন।
ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাই কোর্ট হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে। অপর আসামি শনিরাম মণ্ডল খালাস পান। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল এই চার আসামিকে আপিলের অনুমতি দেয় সর্বোচ্চ আদালত। অপর আসামি শহীদুল পরে জেল আপিল করেন। এর সাত বছর পর ২০১৬ সালের ২ অগাস্ট রায় দেয় আপিল বিভাগ। আসামিদের মধ্যে কেবল শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়; বাকি চারজন খালাস পান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের বাড়িতে খুন হন তার মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমান। শাজনীন তখন ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। আর শহীদ ছিলেন ওই বাড়ির পরিচারক।