লালমনিরহাটে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা
প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:৫৫
লালমনিরহাটে নিজ মেয়ের সঙ্গে কথা বলার অপরাধে অর্মি রাবিয়া বানি (৩০) নামে এক গৃহবধূকে বেধড়ক পিটিয়েছেন স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ সময় বোনকে বাঁচাতে আসায় গৃহবধূর ছোট ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী আকিদ হোসেনকে (১৬) পিটিয়ে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়া হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) সকালে শিশু রাহি আক্তার স্কুলে যাওয়ার পথে মায়ের সঙ্গে কথা বলে। এমনটি দেখে রাহির বাবা রিগান ছুটে এসে তার স্ত্রী অর্মি রাবিয়া বানিকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। শুধু তাই নয় রিগানের সঙ্গে তার ভাইয়েরা ছুটে এসে ওই গৃহবধূকে মারধর করে। এ সময় নির্যাতিতা গৃহবধূর ছোট ভাই ও এসএসসি পরীক্ষার্থী আকিদ হোসেন বাঁধা দিলে তাকেও পিটিয়ে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয়রা আহত গৃহবধূ ও তার ছোট ভাই আকিদ হোসেনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জানা গেছে, পাটগ্রাম পৌরসভার রহমানপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত নায়েক আহাদ হোসেনের মেয়ে অর্মি রাবিয়া বানি প্রায় ১০ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন প্রতিবেশী মফিজুল হকের ছেলে রিগানকে (৩৫)। ঘর সংসার ভালো চললেও পরে যৌতুক দাবি করে রিগান মিয়া। একপর্যায়ে বাড়ির পাশে আহাদ হোসেন তার মেয়ে ও জামাইকে একটি বাড়ি করে দেন। কিন্তু কিছুদিন থেকে ওই বাড়ি নিজ নামে দলিল করে দেয়ার দাবি তুলেন যৌতুক লোভী রিগান মিয়া। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে।
কয়েকবার সালিস বৈঠকে তা সমাধান হলেও প্রায় এক সপ্তাহ আগে রিগান স্ত্রীকে রেখে তার সাত বছরের একমাত্র মেয়ে শিশু রাহি আক্তারকে নিয়ে অদূরের পিতৃালয়ে চলে যায়।
২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) আকিদ হোসেন বেডে শুয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) দুপুরে গৃহবধূ অর্মি রাবিয়া বানি (৩০) ও তার ছোট ভাইকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ অর্মি রাবিয়া বানি জানান, যৌতুক না পেয়ে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করা হতো। পরে আমরা বাবা আমাকে বাড়ি তৈরি করে দিলে, সেটাও সে লিখে নিতে চায়। কিন্তু যে স্বামী সন্তানের সঙ্গে কথা বলার অপরাধে স্ত্রী পেটায়, তার মতো খারাপ লোক আর কে হতে পারে? বলতে বলতে কেঁদে ওঠেন ওই গৃহবধূ। আমাকে বাঁচাতে এসে ছোট ভাইয়েরও মাথা ফাঁটিয়ে দিয়েছে।
গৃহবধূর স্বামী রিগান বলেন, আমি কখনো যৌতুক চাইনি। এছাড়াও তার শ্যালকের মাথাকে ফাঁটিয়েছে তাও তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
পাটগ্রাম থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুইপক্ষের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি শংকর কর জানান, অভিযোগ ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।