পানিতে ডুবিয়ে স্ত্রী-ছেলেকে হত্যা, স্বীকারোক্তি
প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:২৮ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৯:৩৪
শিশু পুত্রকে পানিতে ছুঁড়ে ফেলে ও স্ত্রীকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এক ব্যক্তি।
শুক্রবার নজরুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি কিশোরগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ জগলুল হকের কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
স্বীকারোক্তির বিষয়টি এ জোড়া-হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পাকুন্দিয়ার আহুতিয়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মতিউর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, পাকুন্দিয়ার বুরোদিয়া ইউনিয়নের পাবদা গ্রামের মৃত মো. আলীর ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ মেয়ে রহিমা আক্তারের (২৮) সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজে ভুগোল বিভাগে স্নাতকের (সম্মান) ছাত্র ও স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক, একই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল।
সম্পর্কের এক পর্যায়ে রহিমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন এবং তার একটি ছেলে হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে রহিমার আত্মীয়দের চাপে গত ১০ জানুয়ারি রহিমাকে বিয়ে করে বাড়িতে তুলেন নজরুল।
গত ১৩ জানুয়ারি বেড়ানোর কথা বলে সন্তানসহ রহিমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন নজরুল। কিন্তু তিনদিন পর নজরুল বাড়ি ফিরে এলেও রহিমা আক্তার ও ৫৫ দিন বয়সী ছেলে আমিরুল নিখোঁজ ছিল। পরে ২১ জানুয়ারি রাতে মীরার টেক এলাকায় রহিমার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ এবং ৩১ জানুয়ারি আমিরুলের গলিত লাশ পাওয়া যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর জানান, রহিমার লাশ উদ্ধারের পরদিন (২২ জানুয়ারি) রহিমার বড় ভাই আব্দুল আউয়াল বাদী হয়ে নজরুল ইসলামসহ তার ভাই দ্বীন ইসলাম, বাবা সোহরাব উদ্দিন ও মা মদিনা খাতুনের বিরুদ্ধে পাকুন্দিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
এসআই মতিউর জানান, গত বুধবার ফেনীর দাগনভুঁইঞা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নজরুল, তার বাবা সোহরাব উদ্দিন ও মা মদিনা খাতুনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর আগে নজরুলের ভাই দ্বীন ইসলামকে পুলিশ আটক করে।
মতিউর রহমান বলেন, নজরুল স্বীকার করেছেন, ১৩ জানুয়ারি সকালে বেড়ানোর কথা বলে রহিমা ও ছেলে আমিরুলকে নিয়ে অটোরিকশাযোগে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সন্ধ্যার দিকে মিরারটেক বিলের পাশের সেতুর উপর থেকে প্রথমে ছেলে আমিরুলকে বিলের পানিতে ছুড়ে মারেন। এরপর রহিমাকে টেনে-হিঁচড়ে বিলে এনে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে কচুরিপানা দিয়ে লাশ দুটি ঢেকে পালিয়ে যান।
জবানবন্দি শেষে নজরুলসহ তার বাবা-মাকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।