২৪ দিন পর সাতক্ষীরা আদালতে হাজির
ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:১৪ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:০১
সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ২৪ দিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) হঠাৎ মেয়েটি আদালতে হাজির হয়।
৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মহিবুল হাসান ওই ছাত্রীর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। ৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মেয়েটিকে গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে মুড়াকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নেওয়া হয়। দেওয়ানীপাড়া গ্রামের আতি মুন্সির ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০) তাকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত।
অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মেয়ের বাবা পরদিন সকালে তালা থানায় অভিযোগ করেন। মোখলেছুর, তার ভাই দেওয়ানীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান খাঁ, আরো দুই ভাইসহ অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করা হয়। টালবাহানার একপর্যায়ে বেসরকারি সংস্থা পরিত্রাণের সহায়তায় গত ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে।
মামলার তদন্তকারী হিসেবে তালা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অহিদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মেয়ের বাবা জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর আসামি মশিউরকে তাঁর কর্মস্থলের সামনের মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসআই অহিদুজ্জামান জানান, মশিউরকে গ্রেপ্তারের পরও মেয়েটিকে উদ্ধার করতে না পারায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। অবস্থা বেগতিক বুঝে আসামি মোখলেছুর আত্মসমর্পণ করে। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান। ৭ ফেব্রুয়ারি মশিউরের রিমান্ড শুনানিকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সবুজ হোসেন মেয়েটিকে আদালতে উপস্থিত দেখিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় মেয়েটি বোরখা পরা ছিল। তার নাম ‘আছিয়া খাতুন’ বলে। বিচারক আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ‘মেয়েটি এখানে কিভাবে এলো?’ একপর্যায়ে মেয়েটির কাছে জানতে চাইলে সে কোনো উত্তর দেয়নি। ফলে বিচারক আসামির জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ড শুনানির জন্য আগামি ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে মেয়েটিকে পুলিশি হেফাজতে দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি করানোর নির্দেশ দেন।
এসআই বলেন, ‘গত বুধবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তাকে আদালতে আনা হয়। পরে বিচারকের খাস কামরায় মেয়েটির ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল মেয়েটিকে তার মা-বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ’
মেয়েটি জানায়, মোখলেছুর অপহরণের পর থেকে জোর করে বিয়ে করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু, বয়স কম হওয়ায় কাজিরা রাজি হননি। কিন্তু, ১৪ ডিসেম্বর রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে রেখে যৌন নির্যাতন করেছে।