রাস্তার পাশে পাওয়া সেই বৃদ্ধাকে নিয়ে গেলেন মেয়ে
প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২৩:৩২
গাজীপুরের পূবাইলে রাস্তায় পাশে পাওয়া সেই বৃদ্ধা আমেনা খাতুনকে (৯০) অবশেষে তার মেয়ে নিয়ে গেছেন।
১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিকেলে বৃদ্ধাকে তার মেয়ে রুবি পূবাইল সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নিয়ে যান।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে রাস্তার পাশে আমেনা খাতুনকে পাওয়া যায়।
সে সময় আমেনা খাতুনের অভিযোগ ছিল, সম্পত্তি লিখে নিয়ে তাকে তার মেয়ে ও মেয়ের স্বামী ওই এলাকায় ফেলে গেছে। অন্তত ২০ দিন এখানে সেখানে থাকার পর ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বৃদ্ধা আমেনাকে দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় একটি টং দোকানে থাকার এবং মিলেমিশে খাবারের ব্যবস্থা করেন। তখন বৃদ্ধা আমেনা খাতুন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। যাকেই দেখতেন তাকেই বলতেন ‘তোমরা আমারে নিতে আইছ’ ইত্যাদি।
এ সংক্রান্ত সচিত্র খবর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের নজর আসে। পরে ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর গাজীপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শংকর শরণ সাহা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পুবাইলে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যান।
উপ-পরিচালক শংকর শরণ সাহা জানিয়েছিলেন, আমেনা খাতুন ঠিকানা বলতে পারলে খোঁজ নিয়ে তাকে তার নিজ বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার বৃদ্ধাকে তার মেয়ে রুবির হেফাজতে তুলে দেন তিনি।
রুবি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি সাভার হলেও তারা টঙ্গী মুন্নুনগর এলাকায় ভাড়া থাকেন। তার মাকে (আমেনা খাতুনকে) নিয়ে তিনি ওই ভাড়া বাসাতেই উঠবেন।
তবে রুবি বেগম সাংবাদিকদের কাছে তার মায়ের করা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার মা (আমেনা খাতুন) বয়স্ক এবং মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন, কখন কী বলেন তার কোনো ঠিক নেই। এর আগেও তিনি ৪ বার কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন।
শংকর শরণ সাহা জানান, বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে তার সম্ভাব্য সব আত্মীয়-স্বজনদের ঠিকানায় আমাদের লোক পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে তার মেয়ের সন্ধান মেলে। বৃদ্ধা তার মেয়ের সঙ্গে যেতে আগ্রহী থাকায় বুধবার বিকেলে মুচলেকা রেখে তাকে মেয়ের সঙ্গে দিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় শংকর শরণ সাহা ছাড়াও গাজীপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বোরহান উদ্দিন, পূবাইল আশ্রয়কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক দেওয়ান আব্দুল আওয়াল, পূবাইল আশ্রয়কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক সুপর্না দাস, স্থানীয় সাংবাদিক আশরাফুল আলম আইয়ুব ও কাজী শহীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।