'গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় ৬ মাসের মধ্যে মনিটরিং সেল'
প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:২৬
২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আইনগত সুরক্ষায় করা নীতিমালা বাস্তবায়নে সরকারকে ৬ মাসের মধ্যে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নীতিমালার বিধান অনুসারে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সকল সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এই মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’র বিধানগুলো বাস্তবায়নেরও নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা একটি রিট আবেদনে তিন বছর আগে দেওয়া রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজহারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এই রায় দেয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এই রিট আবেদন করেন। আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গনির বেঞ্চ রুল জারি করে। গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় আইন প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আইন সচিব, শ্রম সচিব এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার আইন করার পদক্ষেপ নিতে মনিটরিং সেল গঠনের এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, “রুলের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, সরকার গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি প্রণয়ন করেছে। তখন আমরা ওই নীতিমালা যথাযথ অনুসরণের আর্জি জানাই।”
মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত ২০১৫ সালের নীতিমালা অনুসারে মাসের ৭ তারিখে বেতন দেওয়া, শ্রম আইন মেনে চলা, দুর্ঘটনা হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, যৌন হয়রানির মামলা হলে সরকারের পক্ষ থেকে তা পরিচালনা করা, গৃহকর্মীর আচরণ খারাপ হলে তাকে বাদ দেওয়াসহ নীতিতে থাকা সংশ্লিষ্ট বিধানগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়া ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালায়’ বলা হয়েছে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং গৃহকর্মীরা সবেতনে চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়াও অন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
এছাড়া ১৪ বছরের কম বয়সী কাউকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না এবং তাদের বিশ্রামের পাশাপাশি বিনোদনের সময় দিতে হবে বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয় ওই নীতিমালায়।
সেখানে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় সরকারকে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নবম অনুচ্ছেদে এই নীতিমালার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং সেল করে সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং অফিসার নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।