দুর্ঘটনা রোধে মানববন্ধন, ছাত্রলীগের 'বাধা'
প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:২৪
দুর্ঘটনা রোধে বাস চালক তথা কর্তৃপক্ষকে আরো সতর্ক হবার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন সম্প্রতি দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া ফারজাতুল ইসলাম ও গুরুতর আহত হওয়া তারই সঙ্গী শামিমা ইয়াসমিনের বন্ধুরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার চট্টগ্রামের দামপাড়া বাসস্ট্যান্ডে হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারের সামনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তরুণ সমাজ’র ব্যানারে মানবন্ধনের আয়োজন করেন ফারজাত ও শামিমার বন্ধু সহ শুভানুধ্যায়ী অনেকে। মানববন্ধনে বক্তারা সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকদের ওভারটেকিং কমানো, চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম, ট্রাফিক আইন মেনে চলা ও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। কিন্তু শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচীতেও বাধা দিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগ।
জানা গেছে মানববন্ধনে বাধা দেয় এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকরা।
আয়োজকদের একজন তোফাজ্জেল অভি বলেন, "আজকের কর্মসূচি ছিল দামপাড়া পুনাক ভবন থেকে সমাবেশ পরবর্তী হানিফ পরিবহন কাউন্টার অভিমুখে মিছিল এবং মানববন্ধন। ঘন্টাখানেক ঘেরাও করে আমরা কাউন্টার কর্মচারীদের অনুরোধ করি আমাদের সাথে সংহতি জানিয়ে যেন ৩০ মিনিট কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়। তারা মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে, তারপর মালিকপক্ষের সাথে মোবাইলে কথা বলিয়ে দেয়। মালিকপক্ষ প্রথমে দুঃখ প্রকাশ করে কাউন্টারের সামনে থেকে সরে যেতে বলে। আমরা অস্বীকৃতি জানালে ওদের সাথে বাকবিতণ্ডা চলে। একপর্যায়ে তারা ভাড়াটে গুন্ডা নিয়ে আসে যারা নিজেদের ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিচ্ছিল এবং আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে সরে যেতে বলে। বিভিন্ন নেতার মাধ্যমে কল দিয়ে আমাদের বিব্রত করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে শেষপর্যন্ত অটল ছিলাম। শেষপর্যন্ত তারা তাদের কাউন্টার ৩০ মিনিট সিদ্ধান্তে বন্ধ রাখে"।
ফারজাত ও শামিমার বন্ধু, আয়োজকদের আরেকজন সৃজিতা মিতু অভিযোগ করেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। এসময় কিছু ছেলে এসে আমাদের কয়েকজনের গায়ে ধাক্কা দেয়। আমাদের বলে যে এটা তাদের এলাকা, এখানে নাকি এসব আন্দোলন করা যাবে না"।
মানবন্ধনে অংশ নেয়া পুষ্প গুপ্তা মুন বলেন, "আমি মানববন্ধনের ভিডিও করছিলাম, তারা আমাকে বাধা দিয়েছে। অন্যদেরও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে"।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ভিপি ওয়াসিম বলেন, "যারা মানববন্ধন করছিল তারা হানিফের বাস কাউন্টারটি বন্ধ করে দিতে চেয়েছে। আমি তাদেরকে বলেছি, আপনাদের দাবি নিয়ে আপনারা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। তাহলে সমস্যার সমাধান হবে"।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লার কালিবাজার এলাকায় হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনায় ফারজাতুল ইসলাম নামে চট্টগ্রামের এক তরুণ ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় শামিমা ইয়াসমিন নামের আরও একজন। শামিমা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।