'এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন'
প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:৩৫
এখন থেকেই আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অক্টোবরে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভানেত্রী পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর শনিবার প্রথম ধানমণ্ডিতে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
বিকাল সাড়ে ৪টায় কার্যালয়ে ঢুকে প্রথমেই অঙ্গ-সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। পরে দলের কাযনির্বাহী সংসদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
টানা আট বছর ক্ষমতায় থাকায় এবার আরও ‘কঠিন পথ’ পাড়ি দিতে হবে বলে নেতাকর্মীদের মনে করিয়ে দেন তিনি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর তিন বছর পূর্ণ হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা তিনবছর পূর্ণ করে চার বছরে পা দিয়েছি। একটানা আট বছর। কাজেই এখনকার পথ হবে আরও কঠিন পথ। আমাদের যে কাজগুলি আছে সেগুলি শেষ করতে হবে, যাতে আমাদের দেশের মানুষ ভালো থাকে।”
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার প্রণয়নের বিষয়ে এখনই চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে জানান তিনি। আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় ইশতেহার তৈরির লক্ষ্যে বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা ‘সেল’ গঠন করতে উপদেষ্টামণ্ডলীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা করেছিল ‘তার থেকে বেশি কাজ হয়েছে’। এবার তিন বছরে নির্বাচনী ইশতেহারের ওয়াদা বাস্তবায়নেও তার দল এগিয়ে আছে। এটাই আওয়ামী লীগ- আমরা যা বলি তা করি, করতে পারি। আমাদের রাজনীতি জনগণের জন্য। যা করি জনগণের স্বার্থে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০২১ সাল পর্যন্ত ইতোমধ্যে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছি। অনেকগুলি কিন্তু হয়ে গিয়েছে। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে কী কী করণীয় এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের কাজ চলছে।”
নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কম আসার ব্যাখ্যায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যানজটে মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে জনস্বার্থেই কম আসা হয়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “রাজনীতিতে একটা কথা মনে রাখতে হবে। দেশের কথা চিন্তা করে, মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা রাজনীতি করি। মানুষের কল্যাণে কাজ করছি, কাজ করব-এই চিন্তাটা যদি মাথায় থাকে, নীতিটা যদি ঠিক থাকে তাহলে যে কোনো চড়াই উৎরাই পার হয়ে, আমি মনে করি যে, কাজগু্লি করা যায় এবং যে কোনো অর্জন করা যেতে পারে।”
নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি নিজের জন্য চিন্তা করি না- কী হল না হল। আমিতো আমার দেশের মানুষ কেমন আছে, তাদের কী অবস্থা, তারা ভালো আছে কি না, তারা খেতে পাচ্ছে কি না, তারা শিক্ষা পাচ্ছে কি না, চিকিৎসা পাচ্ছে কি না-এই চিন্তাই সব সময় করি। এই চিন্তা আমরা করি বলেই তো আমরা কাজ করে সফলতা পাচ্ছি।”
নেতাকর্মীদের সততা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলার আহ্বান জানান তিনি। এক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে হাত দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নতি হয় সেটা এখন মানুষ উপলব্ধি করতে পারছে বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।
প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে নিয়ে তিনি বলেন, “দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, মানুষ খুন করা, সন্ত্রাস করা, বাংলাভাই সৃষ্টি করা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা- এছাড়া তো বিএনপি দেশকে আর কিছু দিতে পারেনি।”