'সম্ভব হলে এখনই ইসি গঠনে আইন'
প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৭, ০০:০৮
নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সম্ভব হলে 'এখনই' আইন প্রণয়ন করতে প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বুধবার বঙ্গভবনে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। বঙ্গভবনের দরবার হলে দেড় ঘণ্টার এই সংলাপের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের সামনে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
মো. জয়নাল আবেদীন জানান, আওয়ামী লীগের প্রস্তাবগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রস্তাবে বলা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সম্ভব হলে এখনই একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন অথবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে।
প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সময় স্বল্পতার কারণে আগামী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সময় যাতে এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সে উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, 'ভবিষ্যতে নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক হোক এটা সরকার বা আওয়ামী লীগ চায় না। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যাকে উপযুক্ত মনে করবেন, সে প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতির গৃহীত যে কোনো ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন থাকবে’।
নির্বাচনকে স্বচ্ছ করতে আওয়ামী লীগ ই-ভোটিং চালুর প্রস্তাব করেছে বলেও রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জানান।
আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সকল বিধিবিধানের সাথে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ এর প্রবর্তন করা হোক।’
জয়নাল আবেদীন বলেন, 'আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ। অবাধ নির্বাচনে সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ'।
সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে বলেও রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
ইসির নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে চার দফায় মোট ২৩টি দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনা শেষ হয়েছে। পঞ্চম দফায় আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে রাষ্ট্রপতি সংলাপের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে বঙ্গভবন থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে। এ বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু ইসি গঠনের আইন এতোদিনেও না হওয়ায় গতবারের মত এবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনের এই উদ্যোগ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।