বর্বরতার শিকার সুমার অবস্থা আশঙ্কাজনক

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৬:২৬ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৬:৪২

অনলাইন ডেস্ক

পৈশাচিকতার শিকার হওয়া সুমা বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৬নং ওয়ার্ডে কাতরাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে সুমার জিহ্বা দ্বি-খন্ডিত করে দেওয়া ছাড়াও বা পায়ের রগ কেটে দিয়েছে স্বামী বেলাল। এছাড়া ধারালো চাকু দিয়েও কুপিয়েছে।

সুমার ভাবি রুমা বেগম জানান, সুমার অবস্থা খুবই খারাপ। মুখ দিয়ে কথা বলা তো দূরের কথা, কিছু খেতেই পারছে না। পাইপ দিয়ে দুয়েক ফোটা করে পানি ও জুস ওর মুখে দেওয়া হচ্ছে।

সুমার পরিবারের সদস্যরা জানান, সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন পশ্চিম দর্শা গ্রামের মৃত আবদুল আলীর মেয়ে সুমার বিয়ে ২০০৮ সালে পার্শ্ববর্তী খানুয়া গ্রামের মৃত ইছমত আলীর ছেলে বেলাল আহমদের সাথে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন সুমা স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করেন। কিন্তু বেলালের সাথে তার মায়ের বিরোধের কারণে সুমা তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। প্রায় তিন বছর আগে সুমাকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করে বেলাল।

গত কয়েক মাস ধরে বেলাল ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে সুমাকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিল। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-দেনা করে বেলালকে ৩ লাখ টাকা দেন সুমা। কিন্তু বাকি ২ লাখ টাকার জন্য সুমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল বেলাল। গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই সঙ্গীসহ সুমাদের বাড়িতে যায় বেলাল। সুমাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে লাকড়ি রাখার ঘরে ঢুকিয়ে সঙ্গীদের সহযোগিতায় সুমার জিহ্বা দ্বি-খন্ডিত করে ফেলে বেলাল। সুমার বা পায়ের রগ কেটে দেওয়া ছাড়াও চাকু দিয়ে কোপায় সে।

সুমার আর্তনাদে ঘর থেকে দৌড়ে আসে তার মা আয়না বিবি। তাকে দেখেই বেলাল ও অপর দুই যুবক পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত সুমাকে এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার তার বড় ভাই হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে বেলালকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বেলালের মা জয়বুন বেগম, বেলারের মামাতো ভাই ফয়েজ মিয়া এবং ভাগ্নে রেদওয়ান আহমদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। তবে এখনো পলাতক রয়েছে বেলাল।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগরীর জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, মামলার ছয় আসামির তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেলালসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় ধরা পড়বে বেলাল।