'নিজের মেয়ের মুখ মনে পড়ছিল'
প্রকাশ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০১:০৬
তিন দিনের ছুটি নিয়ে রবিবার দুপুরের খানিক আগে রামুর রশিদ নগরে নিজের বাড়িতে পৌঁছেন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল শের আলী। দুই সন্তানকে নিয়ে দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এক বাস দুর্ঘটনার খবর শোনেন তিনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাড়ি খুব কাছে হওয়ায় কয়েকজন প্রতিবেশীকে নিয়ে উদ্ধার কাজে নেমে পড়েন শের আলী।
এরপর সেই দুর্ঘটনা কবলিত বাস থেকে একটি শিশুকে উদ্ধার করে কোলে নিয়ে ছুটছেন তিনি, তার চোখে জলের ধারা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ছবিটি। তার চোখের বাধভাঙ্গা অশ্রু ছুঁয়ে যায় অনেকের মন। কিন্তু কী কারণ সেই অশ্রুর?
এই প্রশ্নের উত্তরে শের আলী নামে বলেন, “মেয়েটি আমাকে আব্বা বলার পর চোখে নিজের কন্যা শিশুর প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছিল। তখন আমি আর কান্না ধরে রাখতে পারিনি।”
শের আলী জানান, একে একে ছয়জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান তিনি। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বাসের ভেতরে ব্যাগ রাখার জায়গায় এক শিশুকে আটকে থাকতে দেখেন তিনি।
শের আলী বলেন, “ব্যাগ রাখার স্থানে শিশুটির মাথা থেকে চোখ পর্যন্ত আটকে ছিল। সেটি ফাঁক করে মেয়েটিকে উদ্ধার করার পর সে আমাকে ‘আব্বা’ বলে পানি খেতে চায়। আমার নিজের মেয়েটিও একই বয়সী। তাই তখন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি"।
শের আলী পরে জানতে পারেন, শিশুটির নাম উম্মে হাবিবা।
শিশুটির চোখে ও মাথায় আঘাত লেগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের পানিরছড়া এলাকায় বাস উল্টে নিহত হন চারজন, আহত হন অন্তত ২৩ জন।