বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প বাতিল দাবি
প্রকাশ | ০৭ জুন ২০১৬, ০২:৪৪
৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’র এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রীন রোডে জাতীয় কমিটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
সভায় সুন্দরবন বিনাশী এনটিপিসি-ওরিয়নসহ সকল প্রকল্প বাতিল, বাঁশখালী হত্যাকাণ্ডের বিচার, নির্যাতন বন্ধ, কম ব্যয়ে-কম ঝুঁকিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এর দাবি জানানো হয় এবং বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতি ও বরাদ্দ না রাখার সমালোচনা করা হয়।
এই সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, রাজনীতিবিদ টিপু বিশ্বাস, রুহিন হোসেন প্রিন্স, জোনায়েদ সাকি, আজিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, আতিক, সুবল সরকার, মাসুদ খান প্রমুখ।
সভায় বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সরকারের কথা ও বাস্তবে তার পরিবেশ বিধ্বংসী তৎপরতার নিন্দা জানানো হয়।
প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা রামপাল-ওরিয়নসহ সুন্দরবন বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে, প্রয়োজনে এই সময়ের মধ্যে প্রকাশ্য আলোচনা বা বিতর্কে আসার জন্য সরকারের প্রতি বারবার আহবান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। বরং সুন্দরবন বিনাশে সরকার তার একগুঁয়ে বিবেচনাহীন জনবিরোধী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এই কারণে সুন্দরবন বিনাশী বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও অন্যান্য অপতৎপরতা বেড়েছে। আমরা বুঝতে পারছি, কতিপয় দেশি বিদেশি গোষ্ঠীর মুনাফা উন্মাদনা সরকারকে বধির করেছে। সুন্দরবন ধ্বংস করার মতো কাজ করে সরকার কোন মুখে পরিবেশ রক্ষার কথা বলে?’
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় জনমতের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ভারতের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করেছে। এর চাইতেও অনেক বেশি বিপর্যয় হতে যাচ্ছে সুন্দরবন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। শ্রীলঙ্কা যদি বাতিল করতে পারে বাংলাদেশ পারবে না কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিশ্বের মধ্যে যেভাবে দুনিয়ার মধ্যে সবচাইতে ব্যয়বহুল, উচ্চ ঋণনির্ভর প্রকল্প হতে যাচ্ছে তাতে তা সারা দেশের অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী বোঝা ও ঋণগ্রস্ততা তৈরি করবে। এছাড়া পারমাণবিক বর্জ্যসহ যেসব ঝুঁকি জনবহুল এই দেশে অনেক বেশি তার সম্পর্কে সরকারের ব্যাখ্যাও অসন্তোষজনক। আমরা সরকারের কাছে জবাব চাই কেন কম ব্যয়ে, কম ঝুঁকিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জনগণকে আর্থিক এবং অস্তিত্বের বিপদে ফেলা হচ্ছে?’
সভায় বক্তারা বাঁশখালীতে হত্যা, নির্যাতনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আইনকানুন নিয়মনীতি ভঙ্গ করে প্রতারণা ও জবরদস্তির মাধ্যমে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবার চেষ্টা থেকেই এলাকায় অস্থিরতা শুরু হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো পরিবেশ অভিঘাত সমীক্ষাও করা হয়নি।’
সভায় বাঁশখালীতে হত্যাকান্ডের বিচার ও জোরজুলুম বন্ধের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে সভায় জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি ও ভুলনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং শেভরন ও নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি নিয়ে আগামী ১৪ জুন মাগুড়ছড়া দিবস পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানানো হয়।