হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন অগ্নিদগ্ধ ফারহানা
প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:৫৩
সারা শরীরে প্রচণ্ড কষ্ট, মুখ, হাত, পা জ্বলে যাচ্ছে। এছাড়া নিশ্বাস নিতেও খুব কষ্ট হচ্ছে। এমন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয়তলায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আশুলিয়ায় গ্যাস লাইটার ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ শিশু ফারহানা আক্তার (১২)।
ফারহানার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। তার বাবা আবুল কালাম একজন রিকশাচালক। ফারিয়া (১০) ও ফামিদা (০৯) নামে আরও দু’টি বোন রয়েছে। মেয়ের যন্ত্রণা দেখে পাশে বসে চোখের জল ফেলেন মা রাশেদা বানু।
রাশেদা বানু জানান, ঘটনার দিন তারা খবর শুনে কারখানার সামনে ফারহানাকে খুঁজতে যান। কিন্তু কারখানার কেউ ফারহানার খোঁজ দিতে পারেন না। পরে তার এক আত্নীয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা ঢামেকে আসেন।
তিনি বলেন, মেয়ের শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। যে কোনো মুহূর্তে মারা যেতে পারে। খালি চিৎকার করে, আমি মারা যাচ্ছি মা, আমারে বাঁচাও...। তাকে আইসিইউতে নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বেড ফাঁকা না পাওয়ায় আইসিইউতে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
রাশিদা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। স্বামী রিকশা চালায়। তার আয়ে সংসার চলে। সংসারের অভাব ঘুচাতেই ফারহানাকে কাজে পাঠাই।
ফাহানার নানি আকলেমা বেগম জানান, টাকা পয়সা নেই, থাকলে তারা ফারহানাকে বাইরে চিকিৎসা করাতেন।
সরকারের কাছে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তা চান তারা।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাভারের আশুলিয়া কালার ম্যাচ বিডি লিমিটেড নামে গ্যাস লাইটার কারখানার আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী আহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেকে ভর্তি হন ২০ জন। এদের মধ্যে দু’জন নিহত হয়েছেন।