অস্ত্রের মুখে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, মেয়রের বাড়ি থেকে উদ্ধার
প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:০১
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই স্কুলছাত্রী তাহেরপুর পৌর এলাকার নূরপুর মহল্লার বাসিন্ধা। শুক্রবার রাতে তাকে মেয়রের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে সন্ধ্যায় ওই স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান স্থানীয় যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
মেয়েটির বাবা জানান, তার মেয়ে জামগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিত। তার মেয়ে তা প্রত্যাখান করায় শুক্রবার সন্ধ্যায় সোহেল রানার নেতৃত্বে যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তার বাড়িতে হানা দেন। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পিংকিকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগমারা থানার পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, অপহরণের খবর পেয়ে তারা মেয়েটির অবস্থান জানার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন মেয়েটিকে স্থানীয় পৌর মেয়রের বাড়িতে রাখা হয়েছে। তখন মেয়েটির বাবাকে নিয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এরপর সেখান থেকেই মেয়েটির বাবা তাকে নিয়ে চলে যান। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি জানান, এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলাও হয়নি। পিংকিকে নিয়ে যাওয়ার সময় এ ব্যাপারে তার বাবার কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, মামলা করবেন কী না তা তিনি পরে জানাবেন।
মেয়েটিকে অপহরণের সময় গোলাগুলি হয়েছিল কী না জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি না। কেউ এ ধরনের কোনো কথা পুলিশকে জানায়নি। অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
এ ঘটনায় মামলা করবেন কী না জানতে চাইলে মেয়েটির বাবা জানান, তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। যুবলীগের কিছু কর্মী ও মেয়রের লোকজন বাড়ির আশপাশে অবস্থান করছেন, যেন তিনি মামলা করতে যেতে না পারেন। এ অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোহেলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়ের বাবা তা মেনে নিচ্ছিলেন না। এ কারণে মেয়েটিই সোহেলকে মোবাইল ফোনে ডেকে তাকে নিয়ে যেতে বলে। কথামতো সোহেল তাই করে। কিন্তু ঘটনাটি শুনেই তিনি সোহেলকে মেয়েটিকে নিয়ে ডেকে পাঠান। তারা এলে তিনি পুলিশ ডেকে মেয়েটিকে তুলে দেন। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে মেয়েটিকে তার বাড়িতে রাখা হয়নি বলেও দাবি করেন মেয়র।