বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন প্রত্যাহারের দাবি
প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ১০:৫৩ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ২১:৪২
সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া বাল্য বিয়ে নিরোধ আইন-২০১৬ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ’ কমিটির চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ ১৮’র নিচে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে যে আইন সভায় পাস হয়েছে এটা সাংঘর্ষিক। মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া এ আইন আমরা প্রত্যাখান করছি। এছাড়া অবিলম্বে এ আইন পরিবর্তনের দাবি করছি। কেননা বাল্য বিয়ে ক্রমশ বাড়ছে, কিন্তু কমছে না। এমতাবস্থায় পাস হওয়া এ আইনের মাধ্যমে বাল্য বিয়ে রোধ নয় বরং আরো বেশি বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, মেয়েরা সাধারণত ১২ বছর বয়স থেকেই গর্ভধারনের উপযুক্ত হয়। তাহলে যে মেয়েটি অনাকাঙ্খিত কারণে ১৪ বছর বয়সে গর্ভধারণ করবেন। সেখানে এ আইন কি ভূমিকা রাখবে। এছাড়া আইনের মধ্যে নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। ফলে মেয়েদের জীবনে সুরক্ষার ফলে আরো বেশি দুর্ভোগ নেমে আসছে।
রিশা, শারমিন ও তনুর ঘটনা উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, বখাটেদের কারণে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঝরে যাচ্ছে নারীর জীবন। এছাড়া নারীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু নারীরা যদি প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া উপহাসে পরিণত হবে।
এছাড়া তিনি পুরস্কার পেয়েছেন নেতা হিসেবে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে। আর এ যদি অবস্থা হয় তাহলে আমরা জবাবদিহি করছি কার কাছে? আমরা অবিলম্বে বাল্য বিয়ে নিরোধ আইনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় পা হারানো বাবার কথা তুলে ধরে শারমিন বলেন, আমার কারণে বাবা তার পা হারিয়েছেন। আমার জন্য পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বখাটেদের প্রতিবাদ করায় বাবা আজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাঁদছে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে, সব বখাটেদের শাস্তি দাবি করছি। এ দেশে যদি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয় তাহলে আমার বাবার নির্যাতনকারীদের কেন বিচার হবে না। অবিলম্বে সব বখাটেদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।
রিশার বাবা রমজান হোসেন বলেন, বখাটের কারণে আমি মেয়েকে হারিয়েছি। কিন্তু এখন কি শেষ অবধি মেয়ে হত্যার বিচারও পাবো না?
সরকারের কাছে তিনি জোর দাবি করেন, বিশেষ ট্রাইবুনালে বখাটেদের বিচার করা হোক। এবং এমন শাস্তি দেওয়া হোক যেন ভবিষ্যতে আর কোনো মেয়েকে কেও অত্যাচার করতে সাহস না পায়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সমন্বয়ক জিনাত আরা হক, জাতীয় কমিটর সদস্য বনশ্রী মিত্রসহ প্রমুখ।