বুশরা ধর্ষণ ও খুনের সকল আসামী খালাস!
প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:৫৩ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:৪৫
২০০০ সালের ১ জুলাই খুন হওয়া সিটি কলেজছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এম এ কাদের ও তার স্ত্রী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রুনা আক্তারকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া শেখ শওকত আহমেদ ও শেখ কবির আহমেদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। এই আদেশের ফলে এ মামলার সকল আসামি খালাস পেলেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এই রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
২০০০ সালের ১ জুলাই রামপুরার পশ্চিম হাজীপাড়ায় পুলিশের প্রাক্তন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সিটি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা ইসলাম খুন হন। বুশরার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাকে ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় একই বছরের ২ জুলাই রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন বুশরার মা। পরে ওই বছরের ৫ অক্টোবর একটি সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। যেখানে বুশরার খালুর সৎভাই আব্দুল কাদের, তার স্ত্রী ও শ্যালককে অভিযুক্ত করা হয়। প্রথমে পুলিশ ও পরে সিআইডি ঘটনার তদন্ত করে ২০০০ সালের ১৯ ডিসেম্বর চারজনকে অভিযুক্ত করে বিচারিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ২০০৩ সালের ৩০ জুন এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩।
রায়ে কাদের, রুহুল ও কবির আহমেদ, শেখ শওকত আহমেদকে মৃত্যুদণ্ড এবং রুনা আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর ডেথ রেফারেন্স ও ক্রিমিনাল আপিল হিসেবে মামলাটি হাইকোর্টে আসে । দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি ফজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ কাদেরের মৃত্যুদণ্ড ও রুনা আক্তারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে বাকিদের খালাস দেন।
পরে কাদের ও রুনা মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে খালাস পাওয়া বাকি দুজনের বিরুদ্ধে আপিল করেন। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ এবং আসামিপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে রায় দেন।
রায়ের পর দিলীরুজ্জামান বলেন, চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকায় ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার আদালত হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের আপিল মঞ্জুর করেছেন। আর রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করেছেন।