২২ দিন লড়াই করে হেরে গেলো অ্যানি
প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ০৩:০৯
বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আগুনে দগ্ধ হন গৃহবধূ অ্যানি বিশ্বাস। হাসপাতালে ২২ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে শুক্রবার মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন তিনি।
শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস মোহাম্মদ খালেদ।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মোহাম্মদ খালেদ বলেন, অ্যানির শরীরে ৩৫ শতাংশ পোড়া ছিল। শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে অ্যানিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মৃত অ্যানি বিশ্বাস (২২) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের শিবু বিশ্বাসের মেয়ে। গত মে মাসে রাঙ্গুনিয়া ইমাম গাজ্জালি ডিগ্রী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় অ্যানির বিয়ে হয় হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম শিকারপুরে গ্রামের দুবাই প্রবাসী লিটন মহাজনের সঙ্গে। অ্যানির গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে অ্যানির স্বামী লিটন মহানজন, শাশুড়ি বেবি মহাজন ও ননদ মন্দিরা বিশ্বাসকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার আসামি অ্যানির শাশুড়ি বেবি মহাজন গ্রেপ্তার আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অ্যানির ভগ্নিপতি জুয়েল দত্ত বলেন, “২১ অক্টোবর সদ্য ভূমিষ্ট আমার কন্যা শিশুকে দেখতে আসতে চেয়েছিল অ্যানি। এ নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে অ্যানির ঝগড়া হয়। শাশুড়ি আর ননদ মিলে অ্যানির কাছ থেকে আলমারির চাবি জোর করে কেড়ে নিতে চায়। এক পর্যায়ে তারা অ্যানির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে চলে যায়।”
জুয়েল বলেন, “আমাদের ফোন দিয়ে বৈদ্যুতিক আগুনে অ্যানি ঝলসে গেছে বলে জানানো হয়। ঘটনার দিনই ওরা অ্যানিকে মেডিকেলে ভর্তি করায়। অ্যানি মৃত্যুর আগে বলে গেছে- শাশুড়ি ও ননদ তার গায়ে আগুন দিয়েছে।”
বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি, স্বামী ও ননদ যৌতুকের জন্য নানা ছুতোয় অ্যানির উপর নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ করেন জুয়েল।
তিনি বলেন, “স্বামী দুবাই থেকে দেশে এসে ব্যবসা করবে- এ জন্য তারা তিনজন মিলে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অ্যানিকে চাপ দিত। বিয়ের পর অ্যানির পড়াশুনা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিয়ের পর তার পড়াশুনা জোর করে বন্ধ করে দেয়"।