৮ জেলার মানুষের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স
প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ০০:১৭ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৬, ০০:২০
রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৮ জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।
রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ২ হাজার ৯৮১টি স্থান থেকে কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগাঁ ও রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি জেলায় কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তৃণমূলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু একটি মহল সরকারের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশে জঙ্গিবাদ ছাড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এদের প্রতিরোধ করতে হবে”।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষেই নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ মাঠ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সেখানে উপস্থিত ওই জেলার বাসিন্দারা। সেখান থেকে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাড. শাহিদুর রহমান খান, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শামিমা হক রোজি ও একজন কৃষক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
এরপর যুক্ত হয় জয়পুরহাট জেলা। জয়পুরহাটের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দান থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আবদুস সাত্তার, সনাতন ধর্ম প্রচারক স্বপন কুমার চক্রবর্তী, ঈমাম আবদুল মতিন, জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন ও কৃষক মকসেদ আলী মণ্ডল।
প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে একবার গ্রহণের জন্য। যার মাধ্যমে একটি পরীক্ষা দিয়েই মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী ওই শিক্ষককে বলেন, “আমরা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে ভাবছি। এটি সম্ভব হলে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। অনলাইনে কেনাকাটা করা সম্ভব হলে পরীক্ষাও দেয়া যাবে”।
এ সময় জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক স্থানীয় সংসদ সদস্যকে কনফারেন্সে কথা বলতে দিতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংসদ সদস্যর কথা তো পার্লামেন্টে শুনি। উনি আজ থাক। আজ জনগণের সঙ্গে কথা বলে নেই”।
জয়পুরহাটের পর কনফারেন্সে যুক্ত হয় নওগাঁ জেলা। নওগাঁর নওজোয়ান মাঠ থেকে কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মামুন, একজন কৃষক, একজন ঈমাম ও সুফিয়া খাতুন নামে এক চাতাল শ্রমিক।
সুফিয়া বলেন, “আমি জীবনেও ভাবিনি আমার মতো একজন সামান্য মানুষের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আপনি কথা বলবেন। আপনি সবার কথা ভাবেন। আমি আজ গর্বিত। আপনার দেয়া ১০ টাকা কেজির চাল পেয়ে আমার মনে হচ্ছে, রেশন শুধু সরকারি চাকুরিজীবিরাই পাবে না, এখন আমরাও রেশন পাচ্ছি”।
সবশেষে কনফারেন্সে যুক্ত হয় রাজশাহী জেলা। রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল হান্নান, নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. ফেরদৌস নিলুফার, বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, ফাদার প্যাট্টিক গোমেজ ও স্কুল শিক্ষক আমিনুল ইসলাম।
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশীদ আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।