মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় চাকরী হারাচ্ছেন প্রধান শিক্ষিকা!

প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০১৬, ০১:৪৩

অনলাইন ডেস্ক

মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ায় চাকরী হারাতে যাচ্ছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার চরমৌকুড়ি বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সামছুন নাহার। ছুটিতে থাকার কারণে স্কুল জাতীয়করণের কাগজপত্রে তার নাম পাঠানো হয়নি। 

সামছুন নাহার অভিযোগ করেন, সামছুন নাহারের ছুটির সময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মিজানুর। জালিয়াতির মাধ্যমে মিজানুর রহমান এর নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

তিনি অভিযোগ করেন তাকে না জানিয়ে সব কিছু গোপনে করা হচ্ছে। স্কুল সরকারী করণ হওয়ার কারণে তাকে বাদ দিতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। খেলা হচ্ছে লাখ লাখ টাকার। সবাই টাকা খেয়ে আমাকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেন সামছুন নাহার। 

এলাকাবাসী জানান, ঝিনাইদহ শৈলকুপার চর-মৌকুড়ি গ্রামে ২০১১ সালে একটি বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। মোছাঃ সামছুন নাহারসহ চার জন শিক্ষকের টাকায় স্কুলের জমি কেনা হয়। ওই জমিতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করে আসছেন সামছুন নাহার। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারী থেকে সামছুন নাহার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যান। এই ছুটির সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি মিজানুর রহমান নামের একজনকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। 

এরপর ছুটি শেষে যোগদান করতে গেলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই সময় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তিনদফা তদন্ত শেষে শৈলকুপা উপজেলার তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দীন মোহাম্মদ ৪ নভেম্বর সামছুন নাহারকে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। 

তারপর থেকে তিনিই প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ উঠেছে স্কুলটি জাতীয়করণের পক্রিয়া শুরু হলে তার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। মিমাংসীত বিষয় নিয়ে আবারো যাচাই-বাছাই শুরু করা হয়। গত অক্টোবর মাসে গোপনে তাকে বাদ দিয়ে মিজানুর রহমানকে প্রধান শিক্ষক দেখিয়ে উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি জেলা শিক্ষা অফিসে একটি রির্পোট দিয়েছেন। 

রিপোর্টে সামছুন নাহার ৬ মাসের ছুটি নিয়ে এক বছর বিদ্যালয়ে আসেননি বলে অভিযোগ করা হয়। এ বিষয়ে সামছুন নাহার জানান, তাকে সরানোর জন্য এই মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগদান করতে গেলে করতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে স্ব-পদে আসতে হয়েছে। এ জন্য তার ৬ মাস পেরিয়ে গেছে। 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খয়বার হোসেন জানান, সামছুন নাহার ছুটিতে থাকাকালে মিজানুর রহমানকে প্রতিষ্ঠান দেখভাল করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ সময় তাকে ভুল বুঝিয়ে একটি নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন, সামছুন নাহারই প্রকৃত প্রধান শিক্ষিকা। তারপরও যাচাই-বাছাই কমিটি তার নাম কেন বাদ দিলেন এটা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না। 

এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: জাহিদুল ইসলাম জানান, নতুন করে অভিযোগ উঠায় নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হয়। ওই কমিটি মিজানুর রহমানের পক্ষে মত দিয়েছেন। জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান জানান, যাচাই বাছাই কমিটি একটি রির্পোট দিয়েছেন। সামছুন নাহার একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।